নৌযান শ্রমিকদের টানা দুদিনের লাগাতার কর্মবিরতিতে মোংলা বন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত জাহাজগুলো থেকে কোন পণ্য বোঝাই খালাস কাজ হচ্ছে না। তবে বন্দর জেটি ও গ্যাস ফ্যাক্টরীতে সামান্য কাজ হচ্ছে। বন্দরে আজ সকালে ১২টি জাহাজ অবস্থান করেছিল। তবে এর মধ্যে দুপুরের পর ৫টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ ও ১টি জাহাজের বন্দরে আগমনের কথা রয়েছে।
মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও মোংলা খাড়িতে এ মুহুর্তে প্রায় ৩ থেকে ৪ শ’ লাইটারেজ জাহাজ অবস্থান করে কর্মবিরতি পালন করছে। কর্মবিরতির শুরু থেকেই জাহাজের পাশ থেকে সব লাইটারেজ জাহাজ সরিয়ে এনে নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। এসব লাইটারেজ জাহাজের কর্মচারীরা এখন অলস সময় অতিবাহিত করছে। বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলভুক্ত র্আন্তজাতকি রুটসহ দেশের সব রুটে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে অনেক ফ্যাক্টরীতে কাঁচা মালের সংকটের আশংকা রয়েছে।
এদিকে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ ব্যাহত হওয়ার কারণে জাহাজে মালামাল বোঝাই খালাস কাজে জড়িত শ্রমিকরা অনেকটা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ’নো ওয়ার্ক, নো পে’ ভিত্তিতে কাজ কারী এসব জাহাজী শ্রমিকরা দু’দিন কোন কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থকষ্টে দিনানিপাত করছেন। তারা অবিলম্বে এ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। তবে দাবী বাস্তবায়নে এখন অনড় অবস্থানে রয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন মোংলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন হাওলাদার বাদশা জানান, গত বছর নভেম্বর মাসে কম বরিতি শুরু করার পর মালিক ও সরকার দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। যার প্রেক্ষিতে খোরাকী ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট চলবে। বর্তমানে নৌযান শ্রমিকরা খুবই দূরাবস্থার মধ্যে দিনাতপিাত করছে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মোংলা বন্দরে কয়েক শ’ লাইটার শ্রমিকরা স্ব স্ব জাহাজে অবস্থান করে কর্ম বিরতি চালিয়ে যাচ্ছে। মালিক পক্ষ আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা চলমান কর্ম বিরতি প্রত্যাহার করবো।
শিপিং এজেন্ট ও মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল জানান, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারেন পণ্যবাহী বিদেশী জাহাজ এ বন্দরে আটকা পড়ছে। এতে প্রতিটি জাহাজের অনুকুলে প্রতি ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২০ হাজার মার্কিন গচ্ছা দিতে হচ্ছে চাটার মালিককে। এ ছাড়া নৌপথে পন্য পরিবহন বন্ধ থাকায় আর্থিকক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন আমাদনীকারকরা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান জানান, বন্দরে অবস্থানরত কয়লা, সার, পাথর ও ক্লিংকারসহ কয়েকটি জাহাজে কর্মবিরতির ফলে পণ্য ওঠা নামার কাজে সমস্যা হচ্ছে। জাহাজের গায়ে যে কয়টি লাইটারেজ জাহাজ অবস্থানে ছিল সেগুলোতে পণ্য বোঝাই করা হলেও নৌ ধর্মঘটের কারণে তা স্থান ত্যাগ করতে পারছে না। আবার কোনও লাইটারেজ জাহাজ নতুন করে ওই ১৪টি দেশি-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাসে কাছে যেতে পারছে না।
খুলনা গেজেট/কেএম