আশরফ গনি সরকারের সীমাহীন দুর্নীতিই আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থানের পথ প্রশস্ত করেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই অভিযোগ প্রাক্তন আফগান কূটনীতিক রোয়া রহমানির। সেই সঙ্গে আমেরিকায় নিযুক্ত প্রথম মহিলা আফগান রাষ্ট্রদূত রহমানি বলেন, ‘‘আমেরিকার মদতে গঠিত আফগান সরকার দেশকে নেতৃত্ব দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। তাই তালিবানের পক্ষে এত সহজে কাবুল দখল করা সম্ভব হয়েছে।”
জুলাইয়ের শেষ-পর্বে আফগানিস্তানের একের পর এক প্রদেশ তালিবান দখল করতে শুরু করলে আমেরিকায় আফগান রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে ইস্তফা দেন রহমানি। তিনি বলেছেন, ‘‘সে সময় অনেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আফগান নাগরিক হিসেবে আমি অবাক হইনি। কারণ, সরকারের অন্দরে নেতৃত্বের অভাব এবং দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিত ছিলাম।” আফগানিস্তানের তালিবানের দখলদারি ভবিষ্যতে ওয়াশিংটনের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের যুক্তি দিতে গিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, তাঁরা আর যুদ্ধ এবং রক্তপাত চান না। রহমানির মতে, আমেরিকার সহায়তায় যে আফগান সেনাবাহিনী গঠিত হয়েছিল, তারাও দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য তালিবানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে আদৌ ইচ্ছুক ছিল না। কারণ, পুরো ব্যবস্থাটাই ছিল দুর্নীতিতে ঘেরা। ১৫ অগস্ট তালিবানের কাবুল দখলের পর প্রেসিডেন্ট গনির বিদেশে পালানোকেও ‘হতাশাজনক’বলেছেন তিনি।
প্রায় ৩ বছর আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত পদে কাজ করেছেন ৪৩ বছরের রেহমানি। দেশে তালিবানের ক্ষমতা দখলের ইঙ্গিত স্পষ্ট হতেই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আফগানিস্তানে ফেরেননি। রেহমানি বলেন, ‘‘আফগান নিয়ন্ত্রিত সরকার বা সামাজিক ব্যবস্থায় মহিলাদের কোনও স্থান নেই। নয়া তালিবান সরকারেও কোনও মহিলাকে রাখা হয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট, মহিলাদের সম্পর্কে তালিবান নেতৃত্বের কী ভাবনা। প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যে সাহসী আফগান মহিলারা পথে নেমে তালিবানের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের আমি সালাম জানাই।”