দলের সেরা তারকা নেইমারের হ্যাটট্রিকে পেরু জয় করলো পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। পেরুর এস্তাদিও ন্যাসিওনাল দে লিমায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৪-২ গোলে হারিয়েছে সেলেসাওরা। এই জয়ে দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ধাপে ২ ম্যাচ শেষে শীর্ষে আছে তিতের শিষ্যরা।
কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষে বড় জয়ে পেরুর বিপক্ষে দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। অপরদিকে ঘরের মাঠে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মোকাবিলার আগে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ড্রয়ে উজ্জীবিত ছিল পেরু শিবিরও। এমনকি ব্রাজিলের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে জয়ের স্মৃতি পেরুভিয়ানদের আত্মবিশ্বাসে রসদ জোগাচ্ছিল।
ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে দ্বিতীয় পরাজয় উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে শুরুটা ভালোই করেছে পেরু। শুরু থেকেই তারকাসমৃদ্ধ ব্রাজিলের সামনে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। তারই ফলস্বরুপ ম্যাচের ৬ মিনিটে মিডফিল্ডার আন্দ্রে কারিলোর গোলে এগিয়ে যায় দলটি। তবে পেরুর মাঠে দিনটি ছিল নেইমারের।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে খেলায় সমতায় ফেরান নেইমার। প্রথমার্ধে দুই দল আর কোনো গোল না করায় ১-১ সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় পেরু ও ব্রাজিল। বিরতি থেকে ফিরে এসে আবার এগিয়ে যায় স্বাগতিক পেরু। ৫৯ মিনিটে পেরুর পক্ষে দ্বিতীয় গোল করেন দলটির ডিফেন্ডার রেনাতো তাপিয়া। তবে সেই লিডও বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ব্রাজিলের তরুণ ফরোয়ার্ড রিচার্লিসনের গোলে খেলায় সমতায় ফেরে সেলেসাওরা।
এরপরই গোলের দেখা পাচ্ছিলো না দুই দলের কেউ। মনে হচ্ছিলো পেরু থেকে ড্র নিয়েই ফিরতে হবে ব্রাজিলকে। তবে গোলের জন্য মরিয়া ব্রাজিল শিবির ২০ মিনিটের মাঝে তিন স্ট্রাইকারকে মাঠে নামান।
ম্যাচের ৮৩ মিনিটে আবার দৃশ্যপটে নেইমার। এই ২৮ বছর বয়সী তারকা ত্রাতা হয়ে এগিয়ে নেয় ব্রাজিলকে। এবারও অবশ্য পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে দলটি। এরপরই কিছুটা আগ্রাসী হয়ে পেরুভিয়ানরা। যার জন্য তিন মিনিটের ব্যবধানে গোলরক্ষক কার্লোস কাসেদা এবং ডিফেন্ডার কার্লোস জাম্ব্রানো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। ৯ জনের পেরুভিয়ানদের উপর এরপর চড়াও হয়ে ওঠে ব্রাজিলিয়ানরা। শেষ ১০ মিনিটে ব্রাজিল পেরুভিয়ানদের ডিফেন্সে বারবার হানা দিতে থাকে।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৪র্থ মিনিটে অবশেষে আরেক গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। সেলেসাওদের সেরা তারকা নেইমার ৯৪ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ৪-২ ব্যবধানের জয় এনে দেয় ব্রাজিলকে। কোচ হিসেবে এটি ছিল তিতের ৫০তম ম্যাচ। শিষ্যরা জয় দিয়ে রাঙালেন কোচের পঞ্চাশতম ম্যাচ।
এদিকে এই ম্যাচে হ্যাটট্রিকের মধ্য দিয়ে নেইমার ব্রাজিলিয়ানদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে জায়গা করে নিলেন। ১০৩ ম্যাচে নেইমারের গোল হলো ৬৪টি। পেছনে ফেললেন ফেনোমেনন রোনালদোকে। তার গোলসংখ্যা ছিল ৬২। নেইমারের সামনে আছেন পেলে। তার গোলসংখ্যা ৭৭।
খুলনা গেজেট/এএমআর