রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকেপড়া এম.ভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মারা যাওয়া জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের পরিবারকে পাঁচ লাখ পাঁচ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ঢাকায় বিএসসির আঞ্চলিক কার্যালয় হাদিসুর রহমানের পরিবারের কাছে এ অর্থ তুলে দেন। এসময়ে ওই জাহাজে থাকা অন্য নাবিকদের ৭ মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা প্রদান করা হয়। সাধারণ বীমা করপোরেশন এ অর্থ পরিশোধ করে। এতে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়।
এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জাহাজ ‘এমভি সমৃদ্ধি’ হারিয়েছি। আমরা আরও জাহাজ সংগ্রহ করে সমৃদ্ধ হব।
নাবিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাহস ও মনোবল হারাবেন না। অফিসার ও নাবিকরা আবার কর্মক্ষেত্রে যোগদান করবেন। বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবেন।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এসএম মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, জাহাজের বীমাকারী প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান। অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, বীমা ব্রোকার টাইজার এন্ড কোম্পানির বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও বিএসসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজ তুরস্কের ইরেগলী বন্দর হতে কার্গো ডিসচার্জ করে গত ২১ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে। জাহাজটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কার্গো লোডিংয়ের নিমিত্ত অলভিয়া বন্দরের ইনার অ্যাংকরেজে প্রবেশ করে। জাহাজ অলভিয়া বন্দরের ইনার অ্যাংকরেজে অবস্থানকালীন ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বন্দরের প্রবেশমুখে মাইন স্থাপন করে রাখা এবং বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় জাহাজ অলভিয়া বন্দরের ইনার অ্যাংকরেজ থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে ২ মার্চ ইউক্রেনের স্থানীয় সময় আনুমানিক বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের সহায়তায় এবং বিএসসির সার্বিক প্রচেষ্টায় গত ৯ মার্চ জাহাজে অবস্থানরত ২৮ জন নাবিককে সর্বোচ্চ দ্রুততার সাথে দেশে প্রত্যাবর্তন করানো হয়। গত ১৪ মার্চ হাদিসুর রহমানের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হাদিসুরকে আমরা ফিরে পাব না। দুর্ঘটনার পর আমার সাথে টেলিফোনে হাদিসুরের বাবা বলেছিলেন, হাদিসুর আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমরা কোথায় যাব। এ চেকটি একটা অবলম্বনের পথ খুঁজে দিল। হাদিসুরের ভাইকে বিএসসিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই