খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ পৌষ, ১৪৩১ | ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  বুধবারের মধ্যে দাবি পূরনের আশ্বাসে সচিবালয়ের সামনে থেকে সরে দাঁড়িয়েছে জবির শিক্ষার্থীরা, অব্যাহত থাকবে ক্যাম্পাস শাটডাউন
  প্রণয় ভার্মাকে ডাকার পরদিনই, দিল্লিতে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনারকে তলব
  জুলাই-আগস্টে গণহত্যা : প্রসিকিউশনের হাতে শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড

নারীদের মানুষ মনে করে না তালিবান : মালালা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আফগানিস্তানের তালিবান গোষ্ঠী নারীদের মানুষ মনে করে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের নারী শিক্ষা অধিকারকর্মী এবং শান্তিতে নোবেলজয়ী নারী মালালা ইউসুফজাই।

একইসঙ্গে আফগান তালিবান সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। রোববার (১২ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আফগানিস্তানে তালেবান সরকার এবং মেয়েদের ও নারীদের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীটির দমনমূলক নীতিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য মুসলিম নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন মালালা ইউসুফজাই।

ইসলামিক দেশগুলোতে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে পাকিস্তান আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। শান্তিতে নোবেলজয়ী এই পাকিস্তানি নারী ওই সম্মেলনে বলেন, “সোজা কথায় বলতে গেলে, আফগানিস্তানের তালেবানরা নারীদেরকে মানুষ হিসেবে দেখে না।”

সম্মেলনে মালালা ইউসুফজাই মুসলিম নেতাদের বলেন, নারী ও মেয়েদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে বাধা দিয়ে তালেবানের যেসব নীতি রয়েছে তার মধ্যে “ইসলামিক কিছুই নেই”। রোববার ইসলামাবাদের এই সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই পাকিস্তানি বলেন, তিনি তার দেশে ফিরে আসতে পেরে “অভিভূত এবং আনন্দিত”।

রোববার তিনি বলেন, তালেবান সরকার আবারও “লিঙ্গভিত্তিক বর্ণবৈষম্যের একটি ব্যবস্থা” তৈরি করেছে। আফগানিস্তানের যেসব নারী ও মেয়ে তাদের (তালেবানর) অন্ধকারময় এই আইন ভঙ্গ করার সাহস দেখাচ্ছেন, তাদেরকে মারধর করার পাশাপাশি আটক করা হচ্ছে এবং নানাভাবে ক্ষতিও করছে তালেবানরা।

মালালা বলেন, তালেবান সরকার তাদের অপরাধগুলোকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ন্যায্যতা নামে ঢেকে রাখে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের কর্মকাণ্ড আমাদের বিশ্বাসের জন্য দাঁড়ানো সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধেই যায়।

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার অবশ্য মালালার এসব মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যদিও তারা আগে বিভিন্ন সময়ই দাবি করেছে, তারা আফগান সংস্কৃতি এবং ইসলামিক আইনের ব্যাখ্যা অনুসারে নারীদের অধিকারকে সম্মান করে।

বিবিসি বলছে, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি), পাকিস্তান সরকার এবং মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের পরিচালিত এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য তালেবান সরকারের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা এতে যোগ দেয়নি।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের কয়েক ডজন মন্ত্রী এবং আলেম-ওলামারাও ছিলেন যারা মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টের মাঝামাঝিতে আশরাফ গনিকে হটিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে তালেবান। সেসময় প্রথমে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া বন্ধ করে তারা। এরপর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ করা হয় নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ।

এছাড়া ২০২১ সালে তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে বিশ্বের কোনও দেশই তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, আফগানিস্তানে নারীদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে যেসব নীতি চালু করা হয়েছে তার পরিবর্তন করা দরকার।

মূলত, আফগানিস্তান এখন বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নারী ও মেয়েদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। মালালা রোববার বলেছেন, “আফগানিস্তানই বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর শিক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম থেকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!