মে দিবস উপলক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা শ্রমিক দলের র্যালিতে পুলিশের লাঠি চার্জের অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সোমবার (১ মে) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নগরীর স্টেশন রোডে পুলিশের বাঁধায় র্যালি পন্ড হয়। এসময় খুলনা মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফি ও সদস্য ইসলাম খলিফাকে আটক করা হয়েছে।
দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন নগর বিএনপির আহবায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মে দিবস উপলক্ষে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দলীয় কার্যালয়ে আজ সকালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক সমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করে নগর ও জেলা শ্রমিক দল। বিষয়টি ৭ দিন আগে কেএমপিকে অবহিত করা হয়। আজকের দিনে অন্যান্য শ্রমিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান কর্মসূচি পালন করবে, অথচ শ্রমিক দল করতে পারবে না। বিএনপি একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে অধিকার আছে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পালন করার। অথচ আজ সকাল থেকে বিএনপি অফিসের প্রবেশদ্বারে শত শত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের আসতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। পরে খুলনা রেল স্টেশন রোডে শ্রমিক দলের র্যালিতে পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে। একইসঙ্গে শ্রমিক দলের ২ নেতাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের লাঠি চার্জে বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, যেখানে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিনে কর্মসূচি পালন করা যায় না, সেখানে এই সরকারের অধীনে কেসিসি নির্বাচনে কিভাবে অংশ নিবে। কোনভাবেই সম্ভব নয়।
প্রেসব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, স ম আব্দুর রহমান, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলী সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আলম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, শেখ সাদী, আব্দুর রাজ্জাক, কে এম হুমায়ুন কবির, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, সাজ্জাদ হোসেন পরাগ, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, জাহিদুল হোসেন জাহিদ, মিজানুর রহমান মিলটন, ফারুক হোসেন, মজিবর রহমান, এমদাদ হোসেন, আসাদুজ্জামান আসাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলে শফিকুল ইসলাম শাহিন, মুনতাসির আল মামুন, মহিলা দলের এড. তসলিমা খাতুন ছন্দা, শ্রমিকদল নেতা উজ্জল কুমার সাহা প্রমূখ।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, অনুমতি না নিয়ে তাটা রাস্তা আটকে কর্মসূচি পালন করছিল। আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি। এসময় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপির নিন্দা : খুলনা বিএনপি পুলিশি হামলা, লাঠিচার্জ, রবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ, মহানগর শ্রমিকদলের সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফি ও শ্রমিক নেতা ইসলাম খলিফাকে গ্রেপ্তারসহ ১৫জন নেতাকর্মীকে আহত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন।
সোমবার (১ মে) প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন পহেলা মে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। দিনটি আজও শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। শ্রমিকদের যতটুকু দাবি-দাওয়া আদায় হয়েছে তা এই মহান দিবসের হাত ধরে। কিন্তু এমনই একটি ঐতিহ্যবাহী দিনে মহানগর শ্রমিক দলের র্যালীতে খুলনার একশ্রেণির পুলিশ সদস্যরা হামলা চালিয়ে আর্ন্তজাতিক দিবসটিকে কুলষিত করেছে যা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। ঐতিহাসিক দিনটিতে গুলি, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট প্রমাণ করে সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বন্দুকের নলকে বেছে নিয়েছে। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তি ও অতিউৎসাহী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মুলক ব্যবস্থা গ্রহণেরর দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা মহানগর আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি, মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়ক মজিবর রহমান প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এনএম