খুলনায় মো. শাহজালাল নামে এক যুবকের ২ চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগে খালিশপুর থানা পুলিশের সাবেক ওসি নাসিম খানসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দৃষ্টিহীন শাহজালালের মা মোসা. রেনু বেগম বাদি হয়ে মহানগর হাকিম মো. আল আমিনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাহজালাল পিরোজপুর জেলার কাউখালি উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, এএসআই রাসেল, এস আই তাপস কুমার পাল, এস আই মো. মোরসেলিম মোল্লা, এস আই মো. মিজানুর রহমান, কনস্টেবল আল মামুন, আনসার সিপাহী মো. আফসার আলী, আনসার নায়েক আবুল হাসান, আনসার নায়েক রেজাউল হক, এস আই নূর ইসলাম, এএসআই সৈয়দ সাহেব আলী ও সুমা আক্তার।
মামলার আরজিতে বলা হয়, শাহজালাল ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নগরীর খালিশপুর থানার নয়াবাটি রেল লাইন বস্তিতে তার শ্বশুরবাড়িতে যান। ১৮ জুলাই রাত ৮টার দিকে তিনি শিশু কন্যার দুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হন। তখন তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার মিথ্যা কথা বলে পুলিশ তাকে আটক করে খালিশপুর থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে পুলিশ তাদের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু তারা টাকা দিতে পারেনি।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালি বাইপাস এলাকায় নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে স্ক্র-ড্রাইভার দিয়ে খুচিয়ে তার ২ চোখ তুলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ সুমা আক্তার নামে একজনকে দিয়ে শাহজালালের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছিনতাই মামলা করায়।
বিষয়টি জানার পর শাহজালালের মা-বা খুলনায় আসেন এবং কয়েকদিন পর আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল জেলা আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে পুলিশ গাড়িতে করে শাহজালাল ও তার মা-বাবাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ফাঁকা স্ট্যাম্প এবং সাদা ও নীল কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়। পরে তারা জানতে পারেন যে, স্বাক্ষর করা কাগজপত্র ব্যবহার করে পুলিশ সদস্যরা আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নিয়েছে।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম বলেন, শাহজালালের মা-বাবা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এমনকি তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন দেশে আইনের শাসন পূন:প্রতিষ্ঠা হওয়ায় তারা মামলা দায়ের করেছেন। আদালত বাদির আরজি গ্রহণ করে সিআইডি’র পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে/এমএম