একটি আবেদনের শুনানির সময় হাইকোর্ট পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, আসামি ধরেই কেন মিডিয়ার সামনে হাজির করা হয়? বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে ‘ধর্ষণ ও হত্যার শিকার’ স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনায় রিভিশন আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এ মামলার সব নথি নিয়ে হাইকোর্টের তলবে হাজির হয়ে আজ দুই তদন্ত কর্মকর্তা ব্যাখ্যা দেন। তাঁরা হলেন মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন ও মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবদুল হাই। এ সময় আদালত মামলার তদন্তের সময় আসামির দোষ স্বীকার করা স্বাভাবিক কি না, এমন প্রশ্ন করেন।
আদালত বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসামি দোষ স্বীকার করেছে। সেখানে আসামিরা ধর্ষণ ও হত্যার দোষ না করেই তা স্বীকার করল? এই মামলার তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্ষণ ও হত্যা না করেও আসামিরা কীভাবে স্বীকারোক্তি করল, এটা বড় খটকা।’
আদালত আরো বলেন, ‘আসামি গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিচার শেষ হওয়ার আগেই ব্রিফিং করে আসামিদের মিডিয়ার সামনে আনা বিচারকে প্রভাবিত করার সমান। একই সঙ্গে তদন্তকালীন মামলা নিয়ে মিডিয়াতে টকশো করে কথা বলাও অনুচিত।’
আবেদনের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির শুনানিতে বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সব জায়গায় জবানবন্দি নেওয়ার সময় আইনজীবী থাকেন। এটি বাংলাদেশেও থাকা উচিত।’ শুনানি শেষে আদালত ২৪ সেপ্টেম্বর আদেশের দিন নির্ধারণ করেন।
গত ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার স্কুলছাত্রীর জীবিত ফেরত আসার ঘটনায় নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন দায়ের করা হয়। পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির এ আবেদন করেন।
পরে ২৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে কথিত মৃত কিশোরীর ফিরে আসা এবং তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিসহ মামলার সব নথি তলব করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই মামলায় তদন্তের সঙ্গে জড়িত দুই তদন্ত কর্মকর্তাকেও তলব করেন আদালত।
খুলনা গেজেট/এনএম