সুখের খোঁজে প্রথম স্বামীকে রেখে দ্বিতীয় বিবাহ করে খাদিজা আক্তার রুনু। কিন্তু সে সুখ তার কাছে অধরাই থেকে যায়। ১০ বছর সংসার জীবন পার করার পর দ্বিতীয় স্বামীর কাছে জীবন দিতে হয় রুনুকে। বুধবার নগরীর খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা গুলশান এলাকার গৃহবধূ খাদিজা আক্তার রুনু হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চারমাস তদন্ত শেষে খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে রুনুর দ্বিতীয় স্বামী এনামুল আকুঞ্জিকে অভিযুক্ত করে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ লুৎফুল হায়দার জানান, ভিকটিম রুনুর পূর্বে একটি বিয়ে ছিল। সে সংসারে তার দু’টি মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে আসে রুনু। বিবাহ বিচ্ছেদের পর পারিবারিকভাবে এনামুল আকুঞ্জির সাথে বিয়ে হয় তার। পরে দু’জনই ভারত চলে যায়। ভারতে গিয়ে এনামুল খারাপ ব্যবহার শুরু করলে রুনু সেখান থেকে পালিয়ে আসে। দু’ মাস পরে এনামুলও বাংলাদেশে চলে আসে।
তারা দু’জন একসাথে মাত্তমডাঙ্গার মিরাজ হাওলাদারের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। এ বছরের ২২ মে দু’জনই শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে বিকেলে বাড়িতে ফিরে আসে। এর পরের দিন নিহতের মা বিকেল তিনটায় মেয়ের বাসার দরজায় তালা দেখে বাড়ি ফিরে আসেন। রাত নয় টার দিকে তালা ও মোবাইল করে মেয়েকে না পেয়ে মায়ের মনে সন্দেহ হয়। পরে রাত ১০ টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বাড়ির মালিকের সহায়তায় ঘরের তালা ভেঙ্গে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ ঘরের ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। লাশের পাশে কয়েকটি বেনসন সিগারেটে ফিল্টার ও একটি চিঠি পড়ে রয়েছে। চিঠিতে রুনুকে হত্যার কিছু কারণ লেখা ছিল।
হত্যাকান্ডের দু’দিন পর অভয়নগর উপজেলার সমসকাটি(বর্তমান ঘোড়া দাইল) গ্রাম থেকে নিহতের স্বামী এনামুল আকুঞ্জিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা পুলিশকে জানায়।
২৭ মে এনামুল হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। হত্যাকান্ডের কারণ হিসেবে আসামি এনামুল আদলতে স্বীকার করে যে, সিএনজি চালিয়ে যে উর্পাজন হতো তা দিয়ে তাদের সংসার ভালোভাবে চলতো। রুনুকে বর্ডার এলাকা থেকে মালামাল এনে বিক্রি করতে নিষেধ করলে, তা অমান্য করতো। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রায় কলহ বিবাদ লেগে থাকতো। ওইদিন তাদের মধ্যে বিবাদ লাগলে হাতের কনুই’র মধ্যে রুনুর গলা আটকিয়ে ধরে এনামুল। নিস্তেজ হয়ে গেলে এনামুল তাকে ছেড়ে দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে লাশ ঘরের ভেতরে রেখে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় সে।
খুলনা গেজেট/ টি আই