দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার বাড়াতে ৩০ হাজার নতুন কর্মীর সন্ধানে নেমেছে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ। জাতীয় কাউন্সিলের আগে সদস্য সংগ্রহে নামবে দলের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখা। ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, অবৈধ অস্ত্রধারী, সাজাপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সন্তানরা দলের নতুন সদস্য পদ পাবেনা। ইউনিয়ন পরিবষদ নির্বাচনে ব্যর্থতার গ্লানি ঢাকতে জোরেশোরে নামবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিজয়ী করতে।
গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শাসক দলের মনোনীত প্রার্থীদের বড় একটা অংশ হেরেছে। বিশেষ করে কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন ও ডুমুরিয়া উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে দলের মনোনীত প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে পরাজিত হওয়ার পর শাসক দল ইমেজ সংকটে পড়ে। বটিয়াঘাটা উপজেলার একটি ভোট কেন্দ্রে শাসক দলের মনোনীত প্রার্থী কোন ভোট না পাওয়ায় দলের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃ্ষ্টি হয়। কয়েকদফা চিঠি চালাচালি হয়। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান যথাক্রমে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ইউপি সচিবকে প্রহার করায় দলের মধ্যে কাদা ছুড়াছুড়ি হয়। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগ একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
আগামী বছরের শেষ দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনমত পক্ষে আনার জন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রস্তুতি হিসেবে খুলনা জেলার ৬৮ টি ইউনিয়নে ৬১২ টি ওয়ার্ডে ২০০ প্রাথমিক সদস্য নবায়ন, ৫০ জন করে নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদস্য ফরমও জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে এসে পৌঁছেছে। তবে শর্তারোপ করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সদস্য, ইতিপূর্বে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, অস্ত্রধারী, সাজাপ্রাপ্তদের শাসকদলের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া হবে না। দলের কেন্দ্রিয় নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিরসন করতে হবে।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিত কুমার অধিকারী এ প্রতিবেদককে জানান, বিভিন্নস্থানে হারিয়ে যাওয়া ইমেজ উদ্ধারে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে ভোটার বাড়াতে নতুন সদস্য পদ দেওয়া হবে। জেলার ৬১২ টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে ৫০ জন করে নতুন সদস্য পদ দেওয়া হবে। সে লক্ষেই দল এগোচ্ছে। নতুন সদস্যের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডের ২০০ জন সদস্যের পদ নবায়ন করা হবে। তিনি জোর দেন জেলা পরিষদের নির্বাচনের পরেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কয়রা উপজেলার সভাপতি জিম এম মুহাসিন রেজা বলেছেন, তরুণদের মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা উন্মেষ ঘটেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তরুণরা আওয়ামী লীগের দর্শনে সম্পৃক্ত হতে চায়। এ ক্ষেত্রে বড় বাধা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা। তার বিশ্বাস দলে নতুন কর্মী সম্পৃক্ত হবে, ভোটার বাড়বে।
খুলনা গেজেট/ টি আই