চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা নেমেছে ৬ হাজারের নিচে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমে এসেছে প্রায় সোয়া চার লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন-ব্রাজিল-পোল্যান্ড। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৫ কোটি ৩৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ লাখ ১০ হাজার।
রোববার (১৪ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫ হাজার ৯৫৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ১২০০-র বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫১ লাখ ১০ হাজার ২১৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২৬ হাজার ২৮১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৯০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৩৬ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ১০৭ জন এবং মারা গেছেন ৫০৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯১ হাজার ৯৯৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৯ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ২৪১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯০ লাখ ৩১ হাজার ৮৫১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৬৭ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। ইউরোপের এই দেশটিতে গত এক দিনে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ২৭৬ জন এবং মারা গেছেন ১০৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ ৯ হাজার ৩৮৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৮ হাজার ১৫৯ জনের।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৩৫১ জন এবং মারা গেছেন ১৫৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৫ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৫ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১২ হাজার ৮৮৮ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ২৫৫ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩৮ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪৪ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৪ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৬৩ হাজার ২৪৫ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১২৪ জন, তুরস্কে ২১৫ জন, ইউক্রেনে ৬৯৫ জন এবং পোল্যান্ডে ২৬৬ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২৪২ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার ৮৭২ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
খুলনা গেজেট/ টি আই