চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা নেমেছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজারে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় সোয়া ৩ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন-ভারত-তুরস্ক ও মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ কোটি ৭৪ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ লাখ ১৪ হাজার।
সোমবার (১ নভেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ৫৯৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় ১ হাজার ৪০০। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫০ লাখ ১৪ হাজার ৭৭৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৮২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ৫৪ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ কোটি ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৬ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ায়। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে মারা গেছেন ১ হাজার ১৫৮ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৯৯৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৯০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৩৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৯৭৫ জন এবং মারা গেছেন ১৬২ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৯৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৯৯ জন মারা গেছেন।
এছাড়া গত একদিনে যুক্তরাজ্যে সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা কমেছে। এই সময়ের মধ্যে ইউরোপের এই দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৯ জন এবং মারা গেছেন ৭৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯০ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৪০ হাজার ৬৩২ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৬ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৭৬১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ৮৫৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৭ হাজার ৮৬০ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫১ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৯৩৫ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৬১২ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭০ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে ১৭৭ জন, তুরস্কে ২০১ জন, ইউক্রেনে ৩৩৬ এবং ফিলিপাইনে ১২৮ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৩২৫ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৬ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।