প্রথমবারের মতো দেশে আলাদা একটি মাদ্রাসা চালু করা হয়েছে। যা তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া সম্প্রদায়) মানুষের জন্য। রাজধানীতে চালু হতে যাওয়া মাদ্রাসার নাম দেয়া হয়েছে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’।
বেসরকারি উদ্যোগে মাদ্রাসাটি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের লোহার ব্রিজের ঢাল এলাকায় তিনতলা একটি ভাড়া বাড়িতে চালু করা হয়েছে। মরহুম আহমেদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই মাদ্রাসাটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মাদ্রাসাটিতে পড়ালেখার জন্য হিজড়াদের কোনো খরচ লাগবে না। ২০২০ সালে সরকার স্বীকৃত কওমি সিলেবাস অনুযায়ী মাদ্রাসাটি পরিচালিত হবে। প্রাথমিকভাবে ১০ জন শিক্ষকের সমন্বয়ে অনাবাসিক এই মাদ্রাসাটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিন তলাবিশিষ্ট বাড়িটির ওপর তলায় ১২০০ বর্গফুট জায়গায় নিয়ে করা মাদ্রাসাটিতে শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করতে পারবেন। এতে যে কোনো বয়সী হিজড়া ভর্তি হতে পারবেন। শুক্রবার দুই পর্বে মাদ্রাসাটির উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে সকালে একটি এবং বিকালে অপরটি।
প্রথমটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হিজড়া কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবিদা সুলতানা মিতু। আর বিকালের অনুষ্ঠানে কামরাঙ্গীরচরের বাইতুল উলূম ঢালকানগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি জাফর আহমাদ প্রধান অতিথি ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত অর্ধশত হিজড়া অংশ নেন।
মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ পরিচালক মুফতি আবদুর রহমান আজাদ নিজেও অন্যতম একজন উদ্যোক্তা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এই মাদ্রাসায় প্রথমে হিজড়াদেরকে কুরআন শিক্ষা দেয়া হবে। এছাড়া কওমি শিক্ষা সিলেবাস অনুযায়ী নূরানী, নাজেরা, হিফজুল কুরআন ও কিতাব বিভাগ চালু হবে। শুক্রবার থেকেই ভর্তি শুরু হয়েছে।
পরবর্তিতে হিজড়াদেরকে কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে আরেকটি আলাদা বিভাগ চালু করা হবে বলেও জানান মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজড়াদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ পরিচয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে এ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। পরের বছর ভোটার নিবন্ধন বিধিমালা প্রণয়নের সময়ই নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিবন্ধন ফরমে লিঙ্গ পরিচয় হিসেবে হিজড়া যুক্ত করে। এরপর থেকে হিজড়ারা বিভিন্ন নির্বাচনেও অংশ নেন।
খুলনা গেজেট/নূর