খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ মাঘ, ১৪৩১ | ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  মারা গেলেন কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল
  রাজনৈতিক দলগুলো কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন : প্রেস সচিব
  তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি ৯ ফেব্রুয়ারি

দেশের বাজারে ভারতের ১৮৪ টন আলু, দাম এখনও কমেনি

গেজেট ডেস্ক

ইতোমধ্যেই ভারত থেকে আমদানি করা ১৮৪ টন আলু দেশে প্রবেশ করেছে। আর আমদানিকারকরা সেই আলু বন্দরে প্রতি কেজি ৩৩ টাকা বিক্রি করেছেন। এর প্রভাবে বন্দর এলাকাসহ দেশের কিছু এলাকায় দাম কমলেও ঢাকার বাজারে কিন্তু এর প্রভাব নেই।

ঢাকার খুচরা বাজারে এখনো প্রতি কেজি আলু ৬০-৬৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দামের এই নৈরাজ্যে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। তাদের কয়েকজন  বলেন, মিডিয়ায় লিখে কোনো লাভ নেই। সিন্ডিকেট নিয়ে অনেক কথা শুনেছি। কিন্তু ওরা এতই প্রভাবশালী যে, ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাই আমরা ভোক্তারা ঠকছি।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ১৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৭ হাজার ২১৫ টন আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ১৮৪ টন আলু এসেছে।

হিলি স্থলবন্দরের আলু আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম জানান, প্রথমবারের মতো আলু আমদানি করেছি। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে এই আলু আনা হয়েছে। দেশে আনার পর বন্দরে প্রতি কেজি আলু ৩৩ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছি। যা আড়তদাররা কিনে নিয়ে গেছেন।

জুন থেকেই অস্থির আলুর বাজার। সে সময় প্রতি কেজি আলু খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। পরে তদারকি সংস্থার অভিযানে কেজি ৩৫ টাকায় নেমে আসে। আবার তদারকি শিথিল হলে আগস্টের শেষে ফের বাড়তে থাকে দাম। সে সময় কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হলেও সেপ্টেম্বরে ৪৫ টাকায় স্থিতিশীল থাকে। ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫-৩৬ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু বাজারে এই দাম কার্যকর হয় না। এরপর অক্টোবরের শেষে দিকে প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা বিক্রি হয়। পরে ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই আলু দেশে আসতে শুরুও করেছে।

মূল্য কারসাজি নিয়ে কারা জড়িত এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে প্রতিবেদন দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা। কৃষক তা সর্বোচ্চ ১৫ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। যা খুচরা বাজারে ৩২ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। হিমাগার মালিক ও মজুতদাররা চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত পরিমাণ আলু বাজারে ছেড়ে দাম বাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু  বলেন, বীজ আলু বাদ দিলে কোল্ড স্টোরেজে খাবারের আলু যা আছে তা দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করছেন, তারা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। মাঠ থেকে নিয়ে পরিবহণ খরচ ও কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া মিলে এক কেজি আলুর খরচ হয় ১৮-২০ টাকা। সংরক্ষণকারীরা ৬-৭ টাকা লাভ করে আলু বিক্রি করলে কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২৬-২৭ টাকায় বিক্রি করতে পারত। সেটাই উচিত ছিল। কিন্তু কোল্ড স্টোরেজে প্রতি কেজি আলু ৩৪-৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এটা ২৭ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আর বিভিন্ন হাত ঘুরে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৬ টাকা বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। কারা দাম বাড়াচ্ছে তা সরকারও জানে। ব্যবস্থা নিলে মূল্য কমে আসবে।

আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অনিয়ম পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা করাও হয়। সঙ্গে মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান আলুর হিমাগার পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি অনিয়ম পান। পরে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রির নির্দেশ দেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। ফলে এক প্রকার অসহায়ত্ব প্রকাশ করে আলু আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেন তিনি।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, সেখানকার বাজারে ভারতীয় স্টিক জাতের আলু ঢুকেছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিন টন বাজারে আসে। এতে শুক্রবার সকাল থেকে আলু প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়। যা ২ দিন আগেও ৫০-৫৪ টাকা ছিল। ফলে বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ১০ থেকে ১২ টাকা কমেছে। এতে জনগণের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এখন প্রতিদিনই ভারতীয় আলু ঢুকবে। ফলে বাজার দর সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!