নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নির্যাতিত সেই নারী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে নির্যাতনের শিকার ওই নারী অভিযোগ করেছেন, গত ২ সেপ্টেম্বর দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার আগে দেলোয়ার দু’বার তাকে ধর্ষণ করেছিলো। এর মধ্যে একবার ধর্ষণ করা হয় প্রায় এক বছর আগে। আর দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করা হয় রমজান মাসের কিছুদিন আগে। দ্বিতীয়বার ধর্ষণের ঘটনার দিন দেলোয়ারের সহযোগী কালামও তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ চৌধুরী ধর্ষণের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ’দেলোয়ার হোসেনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। এছাড়া মামলার আরেক আসামি আবুল কালামকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’
এর আগে গতকাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী এসব তথ্য জানান। তদন্ত দলের প্রধান মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মিলনায়তনে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ওই অভিযোগের কথা বলেন।
নির্যাতনের শিকার নারীর বরাত দিয়ে ফায়জুল কবীর বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন দেলোয়ার প্রায় সময় তাকে কুপ্রস্তাব দিতেন।’
কুপ্রস্তাবে সাড়া দিতে হুমকি-ধামকিও দেন দেলোয়ার। বছর খানেক আগে দেলোয়ার ওই নারীর ঘরে ঢুকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। গত রমজানের কিছুদিন আগে দেলোয়ার তার সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে নেন। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম দু’জনই তাকে ধর্ষণ করতে চান। এ সময় দেলোয়ারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলে কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন। এরপর নৌকায় দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করেন দেলোয়ার।’
নির্যাতনের ঘটনার প্রথম দু’টি মামলায় দেলোয়ারের নাম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভুক্তভোগী নারী দেলোয়ারের নামে মামলা করেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। এমনকি ২২ ধারার জবানবন্দিতে দেলোয়ারের নাম না থাকার কারণ শুধু নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়। একই সঙ্গে ওই নারীকে ধর্ষণের ভিডিওগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেনকে অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন জানালে শুনানি শেষে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর আগে সোমবার বিকেলে একই আদালত এ মামলায় গ্রেপ্তার মো. আবদুর রহিম ও রহমত উল্লাহর তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম