প্রায় দেড় দশক পা পড়েনি বাড়ির উঠানে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়া লেখা বা রাজনীতির মাঝে যখনই সময় পেতেন তখনই ছুটে আসতেন মাটির টানে। শেষ বার বাবা-মায়ের মুখটা দেখেছিলেন সেই দেড় দশক আগে। ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের পর দেশ স্বাধীন হলো ঠিকই কিন্তু মা-বাবা, নানী, দাদাসহ নিকটআত্মীয়ের বেশিরভাগকেই গত প্রায় ১৫ বছরে হারিছেন। প্রতিটি মৃত্যুর খবরে দেশে না আসতে পারার কষ্ট তাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করেছে। দীর্ঘ ১৫ বছর পরে প্রিয় নেতা পারভেজ মল্লিককে কাছে পেয়ে এইভাবেই বলছিলেন এলাকাবাসী।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ মল্লিক সোমবার দেশে ফিরেছেন এবং মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় খুলনার তেরখাদায় নিজ বাড়িতে আসেন।
এলাকাবাসী আরও বলেন, তার আগমনের খবরে জড়ো হয়েছে রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, খুলনা থেকে আত্মীয়স্বজন ও সাধারণ মানুষ। গাড়ী থেকে নেমে আত্মীয়স্বজনসহ সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এতবছর পরে আপনমানুষদের কাছে পেয়ে আনন্দে কাঁদছিলেন পারভেজ মল্লিক। সাবেক নৌ কর্মকর্তা বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ মারা যান ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল। আর মা নুরজাহান বেগমের মৃত্যু হয় চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি। বাবা-মার মৃত্যুতে পারভেজ মল্লিককে দেশে আসতে দেয়া হয়নি। হাজারও দলীয় নেতাকর্মী ও গ্রামবাসীকে নিয়ে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
তেরখাদা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন আমাদের নেতা পারভেজ মল্লিক। প্রবাসে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে তার বাবা-মাসহ অনেক আত্মীয়স্বজনের মৃত্যু হলেও রাজনৈতিক কারণে তিনি দেশে আসতে পারেননি। আজ মুক্ত দেশে তিনি জনতার মাঝে ফিরেছেন এটি ভালো লাগার বিষয়।
জানা গেছে, পারভেজ মল্লিক রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, মামলা ও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের রোসানলের শিকার হয়ে ২০১০ সালের ২৩ জুন দেশ ছেড়ে লন্ডন পাড়ি জমান। প্রবাসে থেকেও বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। হয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক। প্রবাশে জনমত গঠন ছাড়াও বাংলাদেশে আওয়ামী অপশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং তার নিজ এলাকা খুলনায় আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে পারভেজ মল্লিক এর বেশি নাম শোনা যায় করোনা মহামারীর সময়। নিজের এলাকা ও খুলনায় আর্থিক সাহায্য ও সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে প্রায় আলোচনায় আসতেন তিনি।
এ সময় ডক্টর এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ এর যুগ্ম মহাসচিব ডাঃ মনোয়ারুল কাদির বিটু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গালিব ইমতিয়াজ নাহিদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক রবিউল হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহান, যুগ্ম সম্পাদক রাব্বি হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত, সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রাহাত, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরান হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান, সাবেক সদস্য তানজীনুল হাসান, বিএনপির নেতা খান মোস্তাক আহমেদ, রবিউল ইসলাম লাখু, লালিম শেখ, মান্নু শেখ, গোলজার আলম, সাবেক ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম, তফছির শেখ, এনামুল শেখ, এমদাদুল ইসলাম টনি, বাহার মোল্যা, জিয়ার কাজী, পারভেজ মোল্যা, নজরুল মোল্যা, সোহেল তাজ, বাবু চৌধুরী, ফারুক মেম্বর সহ কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা, স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী, আত্মীয় স্বজন ও মুসল্লীরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এএজে