শুধু রান্না বা আচারের উপকরণ নয়; বরং দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজে লাগে ভিনেগার। নানান পদের ভিনেগারের ভেতর সাদা ও অ্যাপল সিডার—এই দুই ভিনেগারই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। চট করে দেখে নেওয়া যাক ভিনেগারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার।
রান্নায় আর রান্নাঘর পরিষ্কারে
রান্নার স্বাদ বাড়াতে, মাছ–মাংসের গন্ধ দূর করতে, খাবার সংরক্ষণ করতে, চর্বিযুক্ত খাবার ও আচারে ভিনেগারের ব্যবহার বেশ পুরোনো। খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়াতে, খাবার দ্রুত সেদ্ধ হতে ব্যবহার করা হয় ভিনেগার।
রান্নাঘর পরিষ্কারেও কাজে দেবে ভিনেগার। এক লিটার পানিতে আধা কাপ ভিনেগার মিশিয়ে রান্নাঘর পরিষ্কার করুন। ভিনেগার ব্যবহার করে ওভেনের দুর্গন্ধও দূর করতে পারেন। একটি কাপে তিন ভাগ পানি ও এক ভাগ ভিনেগার নিন। সেটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করুন খানিকক্ষণ। ব্যস, হয়ে গেল! লাঞ্চ বা টিফিন বক্সের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। অনেক সময় প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে এর ভেতরে ভ্যাপসা গন্ধ হয়। এক টুকরো পাউরুটি ভিনেগারে ভিজিয়ে সেটি রাতভর রেখে দিন বক্সে। সকালে উঠে দেখবেন গন্ধ গায়েব! ফ্রিজ পরিষ্কার করতেও সমপরিমাণ পানি আর ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হতে পারে ভিনেগার
বাথরুমের কর্নারে শ্যাম্পুর সঙ্গে একটি অ্যাপল সিডার ভিনেগারের (এসিভি) বোতল আপনি রাখতেই পারেন। অনেক সময় দেখা যায়, কেনা কন্ডিশনারে যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, তাতে উল্টো আপনার চুলের ক্ষতি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কন্ডিশনারের জায়গা দখল করতে পারে ভিনেগার। শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে এক চা চামচ ভিনেগার মেশান। চুল ধুয়ে নিন। ঝলমলে হবে চুল।
কলমের দাগ ও মরিচা তুলতে
বাসায় শিশু থাকলে এমন দৃশ্য খুবই ‘কমন’। দেয়ালে হাতি, ঘোড়া, গ্রামের দৃশ্য, বাবা মা, বন্ধু! অবস্থা এমন যে নতুন করে আর ছবি আঁকার জায়গা নেই। দেয়াল থেকে কলমের দাগ তুলতে তার ওপর ভিনেগার লাগান। তারপর কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে ঘষুন। দাগ চলে যাবে। ধরুন, দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় কাঁচিতে মরিচা পড়ে গেল। সাদা ভিনেগারে নরম কাপড় চুবিয়ে কয়েকবার কাঁচিটি মুছুন, মরিচা চলে যাবে। এরপর শুকনা নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।
সুস্থ শরীরের জন্য
ওজন কমাতে অ্যাপল সিডার ভিনেগারের (এসিভি) ব্যবহার বহু পুরোনো। শরীরের কোলেস্টরল কমাতে, বারবার খিদে লাগার প্রবণতা কমাতে কাজে আসে এসিভি। গাঢ় মধুর মতো রং আর হালকা টক গন্ধের এসিভিতে আছে সেলুলোজ এবং অ্যাসিটিক অ্যাসিডের এমন একটি সমন্বয়, যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ সালমা পারভিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিদিন এক থেকে দুই চামচ এসিভি শুধু ওজনই কমায় না, মেটাবলিজম বাড়ায়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ (ফাইবার) আছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক। টাইপ–টু ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমিয়ে হৃদ্রোগের আশঙ্কাও কমায়।
ত্বকে রোদের আঁচ ঠেকাতে
এবারের বসন্ত গরমকে সঙ্গে নিয়ে এসেছে। গরমের দিনে চেহারায় রোদে পোড়া কালচে ছোপ বা সানবার্ন সাধারণ একটি সমস্যা। এ সমস্যার সমাধানেও জুড়ি এসিভির নেই। এক কাপ এসিভি, এক কাপ গোলাপজল, এক কাপ পানির মিশ্রণ তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। ঘরে ফিরে মুখ, গলা, হাত এবং পায়ে মেখে বাতাসে শুকিয়ে নিন এক মিনিট। এরপর নরম কাপড়ের সাহায্যে আলতো করে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।
খুলনা গেজেট/কেএ