খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০২২

দুবাই লন্ডন ও সৌদিতে অঢেল সম্পদ নজরুলের

গেজেট ডেস্ক

নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপ ও বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তবে এসব ছাপিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসাবে তার পরিচিতি সর্বত্র। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো তার হাস্যোজ্জ্বল ছবি। এ সুবাদে তিনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবির চেয়ারম্যান পদ পেয়ে যান। এই পদে যাওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদে তিনি দেশের ব্যাংক খাতের অন্যতম মাফিয়া বনে যান। আর্থিক খাতের নানা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজির টাকায় দেশ-বিদেশে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্বের একাধিক দেশে রয়েছে তার বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেফতারের সংবাদ দেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে মজুমদার ব্যাপক ক্ষমতাধর হয়ে ওঠেন।

সূত্র জানায়, লন্ডন এবং হংকং ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মজুমদারের বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে। সেখানে রিয়েল এস্টেট খাতে একাধিক কোম্পানি খুলে তিনি ব্যবসা করছেন। এছাড়া ২০১৫ সালের দিকে তিনি সৌদি আরবের কৃষি খাতে বিনিয়োগ করেন। সৌদির একাধিক খেজুর বাগানে বিনিয়োগ রয়েছে তার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতারের রাজধানী দোহায় তার সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।

সিআইডি জানায়, ব্যক্তিগত ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নাসা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে শত শত কোটি টাকা দুবাই, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধান করছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

সূত্র জানায়, বিএফআইইউ’র অনুসন্ধানে লন্ডনের বাইরে হংকংয়ে নাসা গ্রুপের অর্থ পাচারের অকাট্য প্রমাণ মেলে। হংকংয়ের এম/এস এম.এন এন্টারপ্রাইজ এবং এম/এস ওয়ার্ল্ড টেক্সট্রিম সিও নামের দুটি প্রতিষ্ঠানে নাসা গ্রুপ গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি করে। আবার রহস্যজনকভাবে এ দুটি প্রতিষ্ঠান থেকেই বিভিন্ন গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ আমদানি করা হয়। এখানেই শেষ নয়, হংকংয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দুটির ব্যাংক হিসাব থেকে পুনরায় লন্ডনে মজুমদারের ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়। এতে তার অর্থ পাচারের বিষয়টি দালিলিকভাবে প্রমাণিত হয়। কিন্তু এসব প্রমাণ সত্ত্বেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তখন মজুমদারের বিরুদ্ধে ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এদিকে ট্রেড বেইসড (বাণিজ্যভিত্তিক) মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. আজাদ রহমান।

সূত্র বলছে, মজুমদার মূলত ২০১৭ সালের পর দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে নিজেকে একক ক্ষমতাধর বলে জানান দেন। এ সময় তার বড় ছেলে ওয়ালিদ ইবনে ইসলামের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ভায়রার মেয়ের বিয়ে হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে তিনি বোন (বেয়াইন) ডাকা শুরু করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!