খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

দুধের জন্য কাঁদতে কাঁদতে থেমে গেছে সুমি!

এস এস সাগর, চিতলমারী

চারিদিকে থৈ থৈ পানি। মাঝে দাঁড়িয়ে আছে জীর্ণশীর্ণ কুঁড়েঘর। ঘরের সামনে স্যাঁতস্যাতে উঠান। উঠানে বসে মা মা বলে ডাকছে তিন বছরের শিশু নয়ন। পাশে বসে আছে ১১ মাস বয়সের ছোট বোন সুমি। দুধের জন্য কাঁদতে কাঁদতে সে এখন থেমে গেছে। এগার বছর বয়সের বড় ভাই সজল ও সাত বছর বয়সের বোন স্বর্ণালী আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে তাঁদের দুজনকে সান্তনা দেওয়ার। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ দিকে দূর থেকে এ দৃশ্য চোখে পড়ার পর ছুটে যাই তাঁদের কাছে। কাছে গিয়ে কথা বলে জানতে পারি তাঁদের চার ভাইবোনের জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনী।

সজল ব্রহ্ম জানায়, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের রুইয়ারকুল গ্রামের এই ঝুঁপড়ি ঘরে তাঁরা বসবাস করে। বাবা সুদাস ব্রহ্ম (৩৬) পেশায় দিনমজুর। মা ঝর্ণা বিশ্বাস (৩০) ক্যান্সারে ভূগে মাস দেড়েক আগে মারা গেছেন। সেই থেকে দুধের জন্য ১১ মাস বয়সের ছোট বোন সুমি ব্রহ্ম প্রায়ই ক্ষুধায় ছটফট করে। ছোট ভাই নয়ন ব্রহ্ম সব সময় মায়ের জন্য কান্নাকাটি করে। দিনমজুর বাবা কাজ না করলে তাঁদের চুলা জ্বলে না। তাই সকাল হলেই বাবা বেরিয়ে যান রুজির ধান্ধায়। এরপর তিন ভাইবোনকে সামলানোর দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাধে। সজল এ বছর রুইয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। তাঁর বোন স্বর্ণালী ব্রহ্ম একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। মা মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁদের দুইজনেরই লেখাপড়া বন্ধ।

কাজ থেকে ফেরার পর কথা হয় সুদাস ব্রহ্মর সাথে। তিনি বলেন, সহায় সম্বল বলতে আমার তিন শতক জায়গা। তার আবার চারিদিকে থৈ থৈ পানি। ধারদেনা করে স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছি। এখন ছোটছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে মহাবিপাকে আছি। বর্তমানে দুরমূল্যের বাজারে শ্রম বেঁচে যা আয় হয় তা দিয়ে চাল, ডাল ও নুন কিনতেই সব শেষ হয়ে যায়। ছোট্ট শিশুর দামী দুধ কিনব কিভাবে।

রুইয়ারকুল গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি দুলাল ব্রহ্ম ও নিরুপমা ব্রহ্ম জানান, মা মারা যাওয়ায় সন্তান গুলো এতিম হয়ে গেছে। অভাব এবং দেখভালের অভাবে ওদের এখন বেঁচে থাকা দুসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওদের এখন সরকারি-বেসরকারি ভাবে আর্থিক সাহায্যের দরকার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ওই ব্যক্তি আবেদন দিলে তাঁকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে।

টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!