দলীয় মনোনয়ন ফরম নেননি জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ। পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে নির্বাচনের লড়াই থেকে পিছিয়ে পড়েছেন তার ছেলে রাহগির আল মাহি এরশাদ সাদ ও রওশনের অনুসারী নেতারা। গতকাল ছিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। জাতীয় পার্টির এই অংশটি সবার আগে নির্বাচনে যাবার ঘোষণা দিলেও তারাই লড়তে পারছেন না লাঙ্গল নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ভোটের ময়দান থেকেই হারিয়ে গেছেন রওশন এরশাদ ও তার অনুসারীরা।
জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি স্পষ্ট। বারবার পার্টি মহাসচিব বলেছেন, রওশন এরশাদ মনোনয়ন নিতে চাইলে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন। তার সম্মানার্থে ময়মনসিংহ-৪ আসন খালিও রেখেছিল দলটি। কিন্তু আলোচনা, দেন দরবার না হওয়ায় আর তা সংগ্রহ করা হয়নি। এই আসনে প্রার্থী দেয়া হয়েছে শেষ মুহূর্তে।
আর এরশাদপুত্র সাদ এরশাদের সংসদীয় আসন (রংপুর-৩) থেকে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। রওশনপন্থি নেতারা এখন কী করবেন? এই প্রশ্নের জবাবে ৩ জন নেতা বলেন, যেহেতু আমরা নির্বাচনে যেতে পারছি না। সেহেতু লাঙ্গলের ভোট যত কমানো যায় তার চেষ্টা আমরা করবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, আমরা জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর কৌশলের কাছে পরাজিত। তারা কৌশলে রওশনপন্থি বলে পরিচিতদের দল থেকে বের করে দিয়েছেন। এখন রওশন এরশাদ দলের কোনো ক্ষমতা রাখেন না।
রওশন এরশাদের মুখোপাত্র কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা নির্বাচন থেকে পিছিয়ে গেলাম। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা বসে সিদ্ধান্ত নেবো। দলে ভাঙ্গণের সুর দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহ বলেন, তাদের দলের নেতাকর্মীদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আমাদের তারা ফরমও দেয় নাই। তারাই আমাদের বাধ্য করেছে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য।
গতকাল কিশোরগঞ্জে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ম্যাডামের (বেগম রওশন এরশাদ) কোনো লোকতো মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতেই আসলো না। তাহলে আমার দোষটা কোথায়? ম্যাডামের সঙ্গে যেসব লোক আছেন তারাতো জাতীয় পার্টির কেউ না। যিনি রাজনৈতিক সচিব (গোলাম মসিহ) দাবি করেন তিনিও জাতীয় পার্টির কেউ না। আর মসিউর রহমান রাঙ্গা বহিষ্কৃত, তার ফরম নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। ম্যাডাম ও ওনার ছেলের বিষয়ে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু এর বাইরে যারা আছেন, তাদের জাতীয় পার্টিতে প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না।