বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা শ্মশান ঘাটটি নির্মানের পর থেকে আর উন্নয়নের ছোয়া পায়নি। ২৫ বছরেও কোন প্রকার সংস্কার হয়নি। পৌরসভা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে নদীর তীরে এ ঘাটটি নির্মাণ করা হলেও যাতায়তের জন্য কোন রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি।
ফলে শুরু থেকেই মৃত ব্যাক্তির দেহ সৎকারে জন্য নদীপথে ট্রলার বা নৌকায় করে শ্মশান ঘাটে নিতে হয়। ছাড়া সড়ক পথে নেই কোন ব্যবস্থা। যে কারনেই বছরের পর বছর ভোগান্তিতে এ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। স্থানীয়দের দাবী সড়ক পথ নির্মান, সৎকারের আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়ন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, এ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন সহ একটি পৌরসভার হিন্দু সম্প্রদায়ের কাঠালতলা মহাশ্মশান ঘাটটি নদীর তীরবর্তী দুই যুগ পূর্বে নির্মাণ হলেও লাগেনি তার আধুনিকতার ছোয়া। শ্মশানঘাটি মূল সড়ক থেকে দুই কিলোমিটার দরত্বে, এ সড়ক থেকে শ্মশানে প্রবেশের নেই কোন রাস্তা। মৃত ব্যাক্তির মরদেহ নিয়ে সৎকারের জন্য একমাত্র নদীপথে নৌকা ও ট্রলারযোগে ছাড়া বিকল্প কোন সড়কপথে যাতায়তের ব্যবস্থা নেই। এ ক্ষেত্রে নৌপথে ২/৩ হাজার টাকা ব্যয় করে শ্মশানঘাটে যেতে হয়। যা হত দরিদ্র পরিবারের জন্য কষ্টসাধ্য ও ব্যায়বহুল হয়ে দাড়ায়।
শ্মশানঘাটটি নির্মানের সূচনালগ্ন থেকেই সরকারিভাবে এ প্রবেশ পথের জন্য নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। মরদেহের সাথে সৎকারে আসা স্বজনদেরও বসার নেই কোন ব্যবস্থা। অস্থায়ীভিত্তিতে একটি টিনসেডের একটি ঘর থাকলেও ঘূর্নিঝড় সিডরে ভেঙ্গে গেলে পরবর্তীতে আর কোন সংস্কার হয়নি। এ সম্প্রদায়ের স্থানীয়দের অর্থায়নে শ্মশানঘাটের বেদীটি সংস্কার হলেও রাস্তার জন্য হচ্ছেনা কোন সুরাহা।
এ শ্মশানের সৎকার কমিটির সমন্বয়কারী খোকন শীল বলেন, প্রতিনিয়ত দু-চারজন সৎকারের জন্য শ্মশানঘাটে আসে। বর্ষা মৌসুম সহ ঝড়-বন্যায় দূর্ভোগের অন্ত থাকে না। আমরা যারা মরদেহের সৎকার কাজে নিয়োজিত থাকি আমাদের জন্য সরকারিভাবে কোন বেতন বা সম্মানীর ব্যবস্থা নেই। সরকারের সংশ্লিস্ট ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট শ্মশানের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের দাবী জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা শ্মশান কমিটির সভাপতি জগন্নাথ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা, ব্যবসায়ী পংকজ কুমার ঘোষ, পৌর কাউন্সিলর শংকর কুমার রায় সহ একাধিকরা বলেন, শ্মশান ঘাটটি নির্মানের সময় থেকেই প্রবেশের কোন রাস্তা নেই। সৎকারের মূল বেদী সংস্কারের কাজটি নিজেদের অর্থায়নে করা হয়েছে। লোকজন বসার ঘরটি ভেঙ্গে পড়েছে।
এসব বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে রাস্তা নির্মানের আশ্ব^স্ত করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, কাঠালতলা শ্মশানঘাটের প্রবেশের রাস্তা নির্মানে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশনা মোতাবেক এল.জি.ই.ডি প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মানের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ উপজেলায় কাঠালতলা শ্মশানঘাটের রাস্তা নির্মাণের জন্য ১৫ফুট উচ্চতা ২ কিলোমিটার মাটির রাস্তার কাজ শিগ্রই শুরু করা হবে। পরবর্তীতে পাকা করণ করা হবে। দু কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ঘর নির্মান করারও পরিকল্পনা আছে।