খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

দুই দেশের যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো আপাতত বন্ধ রাখতে চায় ভারত

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিনটি আন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সবই বন্ধ রয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বিপরীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু আন্তর্দেশীয় ট্রেন চালাতে ভারত সরকার এখনই রাজি হচ্ছে না।তবে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ভারতের দিক থেকে একটা সিদ্ধান্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

আবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলে ঢাকায় বন্ধ থাকা ভিসার প্রক্রিয়া ভারতে চালু করতে হবে। ভারতের দিক থেকে বাংলাদেশকে এখনো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য নিরাপদ মনে করা হচ্ছে না। তাই পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও বন্ধ রাখা হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।

যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়ে গত আগস্ট মাসে ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে বেশ কয়েকবার অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় যোগাযোগ করে। তবে তাতে সায় দেয়নি ভারত। এরপর গত ১৯ আগস্ট দুপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালন বিভাগের এক চিঠির বিপরীতে পণ্যবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে অনুমতি দেয় ভারত। ওই রাতেই পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে অনাপত্তি পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর জন্য আমাদের দিক থেকে চেষ্টা চলমান আছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’

নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশের সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়। ওই দিন থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে চলমান আন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

১২ আগস্ট সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু এরপর প্রায় এক মাসেও আন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়নি।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ডের সঙ্গে আলাদা করে যোগাযোগ হয়েছে। এতে দেশটির রেলওয়ে ট্রেন চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ড কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রেন চালানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে চায়। তবে সিদ্ধান্ত আসতে ১০ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আটটি ইন্টারচেঞ্জ থাকলেও পাঁচটি সচল আছে। এর মধ্যে তিনটি পথে যাত্রীবাহী ট্রেন ১৮ জুলাইয়ের আগে চলাচল করেছে। ট্রেনগুলো হলো মিতালী এক্সপ্রেস, মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু তাঁরা এখনই যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে চাচ্ছে না। মূলত নিরাপত্তাঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।’

গত ১৭ জুলাই রাতে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি পরদিন ১৮ জুলাই রাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রেনটি পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের খালি রেক বর্তমানে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করছে। ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে চলাচলকারী আন্তর্দেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনসহ ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং খুলনা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্দেশীয় যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন, মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় চলাচল বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া শাখার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুই দেশের সরকার পর্যায়ের প্রটোকল মেইনটেইন করেই আমরা ভারতকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু ভারত রাজি হচ্ছে না। আমাদের চেষ্টা চলমান আছে।’

যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সড়ক ও আকাশপথের যোগাযোগ সচল রয়েছে। যাদের আগে থেকে ভিসা নেওয়া আছে তারা বাসে ও বিমানে করে ভারতে যেতে পারছে।

কথা হলে গ্রীন লাইন পরিবহনের আরামবাগ কাউন্টারের ‘সৌহার্দ্য’ সেবার ব্যবস্থাপক মো. জাহিদুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিয়মিতভাবেই আমাদের বাস ছেড়ে যাচ্ছে। এক বাসেই সরাসরি কলকাতা যাওয়া যাচ্ছে।’

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!