কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার রাজধানীতে। তাতে এ বার প্রাণ গেল এক কৃষকের। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ চলাকালীন ট্র্যাক্টরটি উল্টে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে ঢোকার মুখে তাঁদের পথ আটকায় পুলিশ। এমনকি গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, ট্র্যাক্টরটিতে সেই গুলি এসে লাগে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় ট্র্যাক্টরটি। তার নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই কৃষকের।
মঙ্গলবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। ব্যারিকেড ভেঙে লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন তাঁরা। সেখানে একাধিক স্তম্ভের মাথায় কৃষক সংগঠনের পতাকা ঝুলিয়ে দেন। কেল্লার সামনের খুঁটি বেয়ে উঠে পতাকা টাঙিয়ে দিতে দেখা যায় এক আন্দোলনকারীকে। সেই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি চরমে ওঠে। কৃষকদের শান্তিপূর্ণ মিছিল এ ভাবে হিংসাত্মক হয়ে ওঠায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
কৃষকদের শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘হিংসা কখনও সমস্যার সমাধান করতে পারে না, চোট যেই পান, ক্ষতি গোটা দেশের’। দেশের মঙ্গলের কথা ভেবে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে কেন্দ্রকেও আর্জি জানান তিনি।
দিল্লি পুলিশের তরফেও আন্দোলকারীদের শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত জন সংযোগ আধিকারিক অনিল মিত্তল বলেন, ‘‘আন্দোলনকারী কৃষকদের অনুরোধ করব, দয়া করে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। শান্তি বজায় রাখুন।’’
কিন্তু উত্তেজনাবশত অল্পবয়সি ছেলেরাই এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন বলে মন্তব্য করেন পঞ্জাব কিসান ইউনিয়নের নেতা রুলদু সিংহ মনসা। তিনি বলেন, ‘‘অল্পবয়সি কৃষকরাও আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। মূলত পঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকেই এসেছেন ওঁরা। লালকেল্লা এবং আইটিও পৌঁছে গিয়েছেন সকলে। ওঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। নির্ধারিত পথ ধরে মিছিল নিয়ে যেতে অনুরোধ করব। আমরা শান্তি বজায় রেখে চলেছি। এখনও সীমানায় আটকে রয়েছে বহু ট্র্যাক্টর।’’
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ মিটে যাওয়ার পরই ট্র্যাক্টর মিছিল ঘিরে তেতে ওঠে রাজধানী। লাঠিচার্জ করে, জলকামান দেগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তাতে সঙ্ঘর্ষ আরও চরমে ওঠে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন বলে সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর। রাজধানীর সর্বত্র যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব দিক থেকে মধ্য দিল্লিতে ঢোকার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন