খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ মাঘ, ১৪৩১ | ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  ময়মনসিংহে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
  মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাসচাপায় পিকআপচালক ও হেলপার নিহত

দাবি পূরণের আশ্বাসে গভীর রাতে হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

গেজেট ডেস্ক

দাবি পূরণের আশ্বাসে গভীর রাতে হাসপাতালে ফিরে গেলেন জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা। রোববার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে থেকে চলে যান। এর আগে সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবিতে রাত সোয়া ১২টার দিকে যমুনার সামনে এসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

রাত পৌনে দুইটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ যমুনার সামনে সাংবাদিকদের জানান, আহতদের দাবিগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। আহতদের দাবি অন্য কোনো সরকার নয়, একমাত্র অন্তর্বর্তী সরকারই পূরণ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কের এমন আশ্বাসের পর আন্দোলনরত আহতরা যমুনার সামনের সড়ক ছেড়ে যান।

এর আগে রোববার দিনভর আগারগাঁও ও শ্যামলীতে মিরপুর রোডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। ওই রাস্তা ছেড়ে সন্ধ্যার পর তাঁরা মিন্টো রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা করেন। রাত পৌনে আটটায় শাহবাগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পৌঁছালে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। এরপর সেখানেই তাঁরা অবস্থান নেন।

আন্দোলনকারীদের একজন আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাত পৌনে ১২টার দিকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের কাছে গিয়ে অবস্থান নেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবস্থান করবেন বলে জানান।

রাত সোয়া ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীদের চিৎকার ও হট্টগোলের কারণে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। এ সময় হাসনাত আবদুল্লাহর সঙ্গে থাকা নেতারা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এ বিক্ষোভের শুরু গত শনিবার সন্ধ্যায়। বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, পুনর্বাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ বিভিন্ন দাবিতে ওই দিন সন্ধ্যায় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিরা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতে একপর্যায়ে তাঁরা আগারগাঁও সড়ক আটকে দেন। গতকাল সকালে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন পঙ্গু হাসপাতালে (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান-নিটোর) চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা। সাভারের সিআরপিসহ বিভিন্ন সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহত ব্যক্তিদের কেউ কেউ এ বিক্ষোভে অংশ নেন।

আন্দোলনকারীদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের সরকারি গৃহায়ণ বা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, তাঁদের পরিচয়পত্র দেওয়া ও রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা; যাঁর যাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা; নারী যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা; বিনা মূল্যে বিমান, রেল ও বাসে চলাচলের ব্যবস্থা, যানবাহন ক্রয়ে শুল্ক-কর পরিহার করা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাষ্ট্রীয় অতিথিশালাসমূহ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আহত ব্যক্তিদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি—এ অভিযোগে তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন আহত ব্যক্তিরা। পরে তাঁরা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন গভীর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ও একজন বিশেষ সহকারী সেখানে গিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা ভোরে বিক্ষোভকারীদের হাসপাতালে ফিরিয়ে নেন। এর পরদিন ১৪ নভেম্বর সচিবালয়ে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয়। বৈঠকে সরকার জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার পাশাপাশি পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথা জানিয়েছিল।

 

খুলনা গেজেট/এইচ

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!