খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

দাপুটে বোলিংয়ের পর স্বস্তিতে দিন পার বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতি‌বেদক

রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনটা ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। এরপর দ্বিতীয় দিন খেলতে নেমে আগের ম্যাচের একই পিচ আচরণ করছিল ভিন্নরকম। শান মাসুদের স্বাগতিক পাকিস্তান যেন অনায়াসেই ব্যাটে বল পাচ্ছিল, আর রান উঠছিল ওয়ানডে মেজাজে। সেখান থেকে ম্যাচটি বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আনার মূল কারিগর বোলাররা। বিশেষত মেহেদী হাসান মিরাজের ফাইফার (৫) ও তাসকিন আহমেদের তিন উইকেটে স্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করেছে টাইগাররা।

শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর আগে পাকিস্তান ২৭৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। এরপর টাইগাররা ব্যাটিং করেছে মোটে ২ ওভার। দিন শেষ করার ঘোষণাটা আসে কিছুটা অবাক করার মতো। কারণ পাকিস্তান এর আগে খেলেছে ৮৫.১ ওভার, সবমিলিয়ে ন্যূনতম আরও ৫-৭ ওভার চলতে পারে মনে হচ্ছিল। দিনের আলোও ছিল স্বাভাবিক।

প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেই অবশ্য নড়বড়ে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশি ওপেনার সাদমান ইসলাম। মির হামজার লাফিয়ে ওঠা প্রথম ডেলিভারিতেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন পঞ্চম স্লিপে থাকা সৌদ শাকিলের হাতে। তবে সাদমানের সৌভাগ্য যে, সেটি হাত ফসকে ফেলে দেন শাকিল। ওই ওভারের ষষ্ঠ বল আরেক ওপেনার জাকির হাসানের ব্যাট থেকে স্টাম্পের দিকে যেতে যেতে ওপর দিয়ে পার হয়ে যায়। তবে স্বস্তির খবর– দিন শেষে দুজনই অপরাজিত আছেন। কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০ রান, এখন পর্যন্ত পাকিস্তান এগিয়ে আছে ২৬৪ রানে।

এর আগে টস জিতে টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিন আহমেদের বুদ্ধিদীপ্ত সেটাপে ফিরেছেন পাক ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক। গত ১ বছরে নিজের ৪র্থ ডাক (শূন্য) নিয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। এরপরের গল্পটা সাইম আইয়ুব আর শান মাসুদের। পুরো সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করেছেন। দলীয় খাতায় উঠেছে ৯৯ রান।

দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই দলীয় সংগ্রহ একশ পার করে পাকিস্তান। কিন্তু বাংলাদেশ ছন্দে ফিরেছে এরপরই। তৃতীয় ওভারে এসেছে প্রথম সাফল্য। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরে যান ৫৭ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। সাইম আইয়ুব খেলছিলেন প্রপার টেস্ট ক্রিকেট। তাকে বড় শট খেলতে একপ্রকার ফাঁদেই ফেলেছিলেন মিরাজ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্লগ করতে চেয়েছিলেন। তবে বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটে আসেনি। বল উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে যেতেই নিখুঁত স্ট্যাম্পিং।

সৌদ শাকিল ফিরতে পারেন শূন্য রানেই। নাহিদ রানার বলে স্লিপে ক্যাচ যায়। তবে তা মিস করেন মিরাজ। ২৮ বলে ১৬ রান করে এগোচ্ছিলেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার। তবে সেটাকে বাড়তে দেননি তাসকিন। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্ট্যাম্পে। তাসকিনের দিনের দ্বিতীয় শিকার হন এই ব্যাটার।

সাকিব আল হাসান চাপ বাড়িয়েছেন। মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন উইকেট। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শেষ বিকেলে চিত্র ছিল। মাঝে মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রিজওয়ানকে নাজমুল হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন এই গতি তারকা। লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচে দারুণ ছন্দে থাকা রিজওয়ান। তার আউটে ষষ্ঠ উইকেট হারায় পাকিস্তান।

২৪ রানের জুটির পর মিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন খুররাম শেহজাদ। ক্যাচ দিয়েছেন মিড–অফে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিব আল হাসানকে। মিরাজ পেয়ে যান নিজের তৃতীয় উইকেট। এরপরেই সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ মিস করেন মুমিনুল হক। জীবন পান মোহাম্মদ আলী।

তবে সেটার সুবিধা পাকিস্তান নিতে পারেনি। মোহাম্মদ আলী বেশিক্ষণ টিকলেন না। মিরাজের বলে স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ হয়েছেন। মিরাজ নিলেন চতুর্থ উইকেট, পাকিস্তান হারায় অষ্টম ব্যাটসম্যান।

সালমান আলী আঘা এরপর মারমুখী হয়েছেন। নতুন বলে তাসকিন আক্রমণে আসতেই উড়িয়ে খেলেছেন। তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই তাসকিনের বলেই ফিরতে হয় তাকে। বাউন্সার বলে খেলতে চেয়েছেন ফাইন লেগে। সাকিব আল হাসান বাউন্ডারি লাইনে নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচ।

আর ঠিক পরের বলেই আবরার এগিয়ে এসে খেলতে গিয়েছিলেন মিরাজকে। ব্যাটে বলে হয়নি। বল লিটনের হাতে জমা পড়তেই ভেঙে দেন স্ট্যাম্প। পূর্ণ হয় মিরাজের পাঁচ উইকেট। পাকিস্তান থামল ২৭৪ রানে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!