খুলনার দাকোপ উপজেলায় চালনা হাটে দিন মজুরের উপস্থিতি উপচে পড়া ভীড়। তবে দিন মজুরের ক্রেতা ছিল অনেক কম।
চলছে রোপা আমনের মৌসুম। বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপনের পালা। শ্রাবন থেকে রোপনের কাজ শুরু হয়ে ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে এ কাজ। আর এ ধান রোপনের জন্য জমির মালিকরা এক সপ্তাহ চুক্তিতে দিনমজুর বাজার থেকে সংগ্রহ করেন।
দাকোপ উপজেলার বাজুয়া বাজার, কালিনগর বাজার ও চালনা বাজারে ধান রোপনের জন্য শ্রমিক কিনতে পাওয়া যায়। হাটের দিন শ্রমিকরা এসে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে যান বিক্রি হওয়ার জন্য। সেখানে আসেন জমির মালিকরা উভয়ের মধ্যে টাকার চুক্তি হয় এবং শ্রমিক এক সপ্তাহের জন্য বিক্রি হয়ে জমির মালিকের সাথে তার বাড়িতে চলে যান, মালিকের জমির ধান রোপনের জন্য।
২৩ আগস্ট বুধবার চালনা হাটে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল নজরে পড়ার মত। স্থানীয় অনেকেই মন্তব্য করেছেন শ্রমিকদের এত ভীড় আগে কখনও চোখে পড়েনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, চালনা ডাকবাংলো মোড় থেকে পুরাতন গরুর হাট পর্যন্ত শুধু লোকে লোকারন্য, মাঝে মধ্যে যানজটও সৃষ্টি হয়েছে। ডাকবাংলো মোড় থেকে লঞ্চ ঘাট রাস্তাতেও ছিল অসম্ভব ভীড়। হাটবাজারে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষের।
সূত্রে জানা যায়, দাকোপ ছাড়াও কয়রা,পাইকগাছা, আশাশুনি,শ্যামনগর সাতক্ষিরা,রামপাল, বটিয়াঘাটাসহ আরও অনেক যায়গা থেকে শ্রমিক আসার কারনে হাজার হাজার শ্রমিকের উপস্থিতি হয়েছে।
কথা হয় শ্রমিক হিসেবে হাটে ওঠা সাতক্ষীরার লিটন মোল্লা, মাহাবুর,পাইকগাছার খড়িয়ার নিরঞ্জন মন্ডল, কয়রার কবির মোড়ল ও নূর ইসলামের সাথে। তারা হতাশার সাথে জানান এলাকায় জমি প্রস্তুত প্রায় শেষ, এত লোক কিনবে কারা! বিক্রি হতে পারবো কি না বলতে পারছি না।
হাটে শ্রমিক কিনতে আসা তিলডাংগা ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম জানান, ৩৫’শ টাকা করে ৩০ জন শ্রমিক নিয়েছি। বাজুয়া থেকে আসা উজ্জ্বল রায় জানান, তিনি ৩২’শ টাকা দরে (প্রতি জন) ১২ জন শ্রমিক নিয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার রোপা আমন চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৯শত ৯৭ হেক্টর। তারমধ্যে ৩৩ নম্বর পোল্ডারের ৫ টি ইউনিয়নের ৯৫ শতাংশ জমি রোপন হয়েছে। ৩১ ও ৩২ পোল্ডারের কিছু জমিতে চারা রোপন এখনও বাঁকি রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে চারা রোপন হয়েছে আশাকরি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাকোপের সমস্ত জমিতে ধান রোপনের কাজ সম্পন্ন হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ