খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: প্রথম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলল ২৫০, বাংলাদেশ পেল ৫ উইকেট

দাকোপে পাউবোর বাঁধ নির্মাণ, আশংকামুক্ত এলাকাবাসী

দাকোপ প্রতিনিধি

নদ-নদীতে অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানি বাড়ায় খুলনার দাকোপ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার পানখালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খোনা গ্রাম তলিয়ে যায়। ২ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও বাঁধ নির্মাণ করল সংশ্লিষ্টরা। আশংকা মুক্ত এলাকাবাসী।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, পাউবো’র ৩১ নম্বর পোল্ডারের খোনা গ্রামের মোল্লা বাড়ির সামনে গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে হঠাৎ বেড়িবাঁধ ধসে যায়। সকালে পাউবোর কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে তাৎক্ষনিক কাজ শুরু করে। শুক্রবার সকাল থেকে বাঁধের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে গ্রামবাসির সহায়তায় কাজ করা হলেও দুপুরের জোয়ারে ভেঙে লোকালয়ে হু হু করে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ভেসে গেছে আমন ফসল ও মাছ।

পানখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সাব্বির আহমেদ এ প্রতিবেদকে জানান, সকাল থেকে ধসে যাওয়া ওই বাঁধ রক্ষার্থে কাজ চলছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রায় ৫০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢাকী নদীর পানি প্রবেশ করে। এসময় পুরো খোনা গ্রাম প্লাবিত হয়। ভেসে গেছে প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির আমন ফসল এবং পুকুর ও ঘেরের মাছ।অনেকের ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। ভাটায় বাঁধ আটকানো না গেলে রাতের জোয়ারে আবারও পানি ঢুকবে এবং ভাঙা অংশ বড় হয়ে যাবে। ফলে গ্রামবাসি স্থায়ীভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাঁধ আটকানো হলো দুই দিন পর। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারনে ভেঙে গেছে বাঁধ। ঝুকিপূর্ণ রয়েছে আরো কয়টি স্থান। ভেঙে যাওয়া স্থান তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করেছেন দাকোপ থানা পুলিশ এবং জনপ্রতিনিধিরা এবং পাউবোর কর্মকর্তারা।

ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহমেদআরো বলেন, সকাল থেকে চেষ্টা করার পরেও আমারা ব্যার্থ হয়েছি। পানি আটকানো সম্ভব হয়নি এখন ভিতরে পানি প্রবেশ করছে। জোয়ার শেষে ভাটাতে আবার বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করে শনিবার বিকালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী গোপাল কুমার দত্ত জনান, নদীতে ভাটা নামলে বাঁশ দিয়ে জিও টিউবের মাধ্যমে পাইলিং করে মাটি দিয়ে বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করা হবে। আশা করছি পরবর্তী জোয়ারে আগে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে।

খোনা গ্রামের বাসিন্দা মো. বাচু ফকির, আকরাম শেখ, মো. হাসান শেখ বলেন, কয়েকদিন ধরে ঢাকী নদীতে ধসে যাওয়া খোনা গ্রামের বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। কিন্তু ধসে যাওয়া বাঁধ রক্ষার আগেই অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানিতে শুক্রবার দুপুরে মোল্লা বাড়ির সামনে থেকে ভেঙে গিয়ে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গরু-ছাগল উঁচু জায়গায় রেখে বাঁধের কাজ করতে পারেন নাই এসেছেন। এভাবে পানি ঢুকতে থাকে ২ দিন। এখন বাঁধা হয়েছে এবং পানিও কমতে শুরু করেছে।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, উচ্চ জোয়ারের কারণে ঢাকী নদীর পাশে খোনা গ্রামের উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধের প্রায় ৩০ মিটার মতো বাঁধ ভেঙে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে জোয়ার-ভাটার কারণে ধীরে ধীরে ভাঙা অংশ বড় হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গত সোমবার হঠাৎ ভাঙনের পাশে ধস নামলে বাঁধ রক্ষার্থে তাৎক্ষনিক মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে মাটি ও জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। তবে জোয়ারের পানিবৃদ্ধি পাওয়ার কারনেক্ক বাঁধটি রক্ষা করা যায়নি। এখন ভাটার সময় পানি আটকানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বাঁশ ও বালু নিয়ে আসা হয়েছে। পুরোদমে কাজ করে বাঁধ বাধা হয়েছে এখন আশংকা মুক্তএলাবাসী।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!