দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। বছর ঘুরে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে খুলনার পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ জায়গায় শেষ হয়েছে প্রতিমা গড়া, চলছে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ।
খুলনা জেলায় এবছর ৯৯১টি মণ্ডপে পালিত হবে দূর্গা উৎসব। এর মধ্যে নগরীতে থাকছে ১০১টি মন্ডপ। তবে খুলনা জেলা প্রশাসন বলছে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
আগামী মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। শনিবার (১২ অক্টোবর) দশমীতে বিসর্জন ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গাৎসব। এদিকে বছর ঘুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই উৎসবকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে যেমন বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা অপরদিকে পুজোর কেনাকাটা করতে নগরীর শপিংমল গুলোতে ভিড় জমিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শিববাড়ি মন্দির, ধর্মসভা, শীতলাবাড়ি, বড়বাজার, পুজোখোলাসহ নগরীর একাধিক পূজা মন্দির ঘুরে দেখা যায়, মন্দিরগুলোতে প্রতিমা শিল্পীদের কর্ম-ব্যস্ততা তুঙ্গে। অধিকাংশ মন্দিরে ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে প্রতিমা নির্মাণ এখন চলছে রঙ-তুলিতে দেবী দূর্গাকে রাঙিয়ে তোলার কাজ।
প্রতিমা তৈরির কাজে সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে নগরীর ধর্মসভা মন্দিরে এসেছেন, চন্দ্রশেখর মন্ডল। তিনি বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা কম। তাই আমাদেরও কাজের সংখ্যা কমেছে। এবার মাত্র চারটি প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। সর্বশেষ ১০-১৫ দিন আগে এখানকার মাটির কাজ শুরু করেছি, এখন রঙের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পূজামন্ডপের বাজেট কমেছে, আগে যে বাজেটে পূজা হতো কমিটি এবার তা অনেকটাই কমিয়েছে।
জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনা মতে সব পূজামণ্ডপে আনসার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। এর সঙ্গে সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ যৌথবাহিনী পূজা শুরুর আগে থেকে উৎসবের দিনগুলোতে টহল দেবে। পূজামণ্ডপে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব বা মিথ্যা তথ্য ছড়ালে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র বন্ধ থাকবে। ডিসি অফিস, ইউএনও ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে।
উল্লেখ্য, এবছর খুলনা জেলার ৯৯১টি পূজামণ্ডপের মধ্যে মহানগরে ১০১টি, বটিয়াঘাটায় ১১৩টি, ডুমুরিয়ায় ২১৪টি তেরখাদায় ১০৭টি, পাইকগাছায় ১৫৫টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে। এছাড়া দাকোপে ৮৪টি, দিঘলিয়ায় ৬৩টি, ফুলতলায় ৩৪টি, রূপসায় ৭৪টি এবং কয়রা উপজেলায় ৪৬টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে