আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাঙালির বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা। আর এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ হবে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের। পদ্মা সেতুর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মানুষের কাছে এটি স্বপ্নের সেতু।
যশোর নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুদুজ্জামান মিঠু পদ্মা সেতু নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা, কত শ্রম ঘণ্টার অপচয় হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমানে প্রমত্তা পদ্মার বুকে দাড়িয়ে আছে এক সেতু যা বাংলার মানুষের স্বপ্ন। যে স্বপ্নের বীজ বপন করা হয়েছিল ১৯৯৮-৯৯ সালে। তিল তিল করে গড়ে তোলা হয়েছে এই সেতু। শুরুতে সেতু নির্মাণের পথ কণ্টকমুক্ত ছিল না, ২০০১ সালের ৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এই সেতু বাস্তবায়িত হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১.২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে আর প্রতিবছর দারিদ্র্য নিরসন হবে ০.৮৪ শতাংশ। আর্থ সামাজিক উন্নয়নে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ৫ কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন আনবে পদ্মা সেতু।
যশোর নাগরিক আন্দোলনের নেতা মিঠু বলেন, পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অতৃপ্তি রয়েছে। কিন্তু বিশদভাবে হিসাব করলে দেখা যাবে এই সেতুতে যে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে কোনো যানবাহনের কাছে বেশি বলে মনে হবে না। কারণ এই সড়কের প্রতিটি গাড়িতেই তেল সাশ্রয়ী হবে বিধায় নির্ধারিত টোলের সাথে সমন্বয় করলে টোল কমই হবে। তারপরও সাধারণ মানুষের অনুভূতির কথা চিন্তা করে কিছুটা হলেও টোল কমানো উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হতে থাকে পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে বসানো হয় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ৪১টি স্প্যান। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। আগামী ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মাসেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।