খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: প্রথম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলল ২৫০, বাংলাদেশ পেল ৫ উইকেট

তেরখাদা : কর্মস্থলে ঘাঁটি গেড়ে অনিয়ম-দুর্নীতির ‘সিণ্ডিকেট’

তেরখাদা প্রতিনিধি

খুলনার তেরখাদার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দুর্নীতির রাজত্ব সৃষ্টি করেছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। এসব ব্যক্তিরা বছর বছরের পর বদলি না হয়ে একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন ধরে জেঁকে বসেছেন। আর দীর্ঘ সময়ে একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে ওই অফিসের সকল ফাঁকফোকর তাদের নখদর্পণে। ফলে এক প্রকার চাপ প্রয়োগ করেই উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতির ‘সিণ্ডিকেট’ গড়ে তুলেছেন। উপজেলার সরকারি দপ্তরগুলোতে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে।

খোঁজ নিয়ে দেখাগেছে, সর্বশেষ উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন একই কর্মস্থলে দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল অভিযোগের পাহাড়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের পর বদলি করা হয়। এছাড়া বদলী হয়েছেন তেরখাদার ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রহ্লাদ রায়, ও মো: জালাল হোসেন। তবে এখনও বহাল রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী।

অভিযোগ রয়েছে, উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা বদলী হলেও ওই অফিসগুলোতে দীর্ঘদিন ঘাঁটি গেড়ে থাকা কর্মচারীরা তাদের সিন্ডিকেটে যুক্ত হতে বাধ্য করেন। এর আগে ওই সিন্ডিকেটের কথা না শোনায় সাবেক ইউএনওকে নানা কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন কর্মচারী। একই অবস্থা বারাসাত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব, তেরখাদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক ও উপজেলা ভুমি অফিসের কয়েকজন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। যাদের সকলের বাড়ি তেরখাদা উপজেলাতে। অফিসের সকল ফাঁকফোকর জানার কারণে মূলত তাদের মাধ্যমেই ঘুষ সিন্ডিকেট পরিচালিত হয়। এছাড়াও এসিল্যান্ড অফিস, কৃষি ও সমাজ সেবা অফিসের বেশিরভাগ কর্মচারী স্থানীয় হওয়ায় ঘুষ সিন্ডিকেটে জড়িয়েছে তারা। এ ধরনের কর্মচারীরা বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে থাকায় সরকারি দপ্তরগুলো তাদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ সেবা প্রত্যাশীরা নানা ধরণের হয়রানি ও প্রতিবদ্ধকতার শিকার হন।

উপজেলা সদরের কাটেংগা এলাকার ইউনুস মোল্যা জানান, সমাজ সেবা অফিসে ভাতার জন্য সেবা নিতে গেলে এক কর্মচারীকে টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। ওই কর্মচারীর ভাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় দীর্ঘ বছর ধরে দাপটে তিনি সমাজ সেবা অফিসে ঘুষ সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে।

একাধিক ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অফিসগুলোকে ঘাঁটি গেড়ে আছেন তাদের মধ্যে গোপন যোগসূত্র আছে। তারা অফিসের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ফাঁদে ফেলে কৌশলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করেন। আর অবৈধ সুযোগ-সুবিধা না দিলেই সেই কর্মকর্তাকে রোষানলে পড়তে হয়। এসব কর্মচারীদের স্বেচ্ছচারিতায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে উর্ধতন কর্মকর্তারাও শঙ্কিত। দীর্ঘদিন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অনেক কর্মচারিরাই কোটিপতি বনে গেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা বেগম নেলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!