আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের একদিনের সংস্করণে বেশ সমীহ আদায় করা দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। অর্জনের খাতাও বেশ সমৃদ্ধ টাইগারদের। ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই কম করেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ২০০৬ সালে কেনিয়াকে দিয়ে শুরু, এরপর একে একে আরও ১২ বার এই স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে ২০০৯ সালের পর দেশের বাইরে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করা হয়ে উঠছিল না। সেই অপেক্ষা ঘোচানোর সুযোগ অধিনায়ক তামিম ইকবালের দলের সামনে। তবে কাজটি একেবারেই সহজ নয়।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের আগের দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। আজ (মঙ্গলবার) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। এ ম্যাচে রেজিস চাকাভার ক্যারিয়ার সেরা ৮৪ রানের সঙ্গে সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের ফিফটিতে আল-আউট হওয়ার আগে স্কোর বোর্ডে ২৯৮ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৯৯ রান।
এদিন একাদশে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে দীর্ঘদিন পর সুযোগ পান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন পেসার মুস্তারিজুর রহমান। তাকে খেলাতে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে।
মাঠে ফিরেই ৩ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শিকারও সমান ৩ উইকেট। তবে বল হাতে লজ্জার রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছেন তিনি। এদিন ৮ ওভার বল করে ৮৭ রান সাইফউদ্দিন, যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। এতোদিন ৮৫ রান দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে খরুচে বোলিং ছিল পেসার আল আমিন হোসেনের দখলে।
আগে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য খুব ভালো হয়নি। নমব ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান, তার বল সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ৮ রান করা তাদিওয়ানাশে মারুমানি। এরপর অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গ ৩৬ ও ডিওন মায়ার্সের সঙ্গে ৭১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে টেনে তোলেন রেগিস চাকাভা। টেলর ২৮ ও মায়ার্স আউট হন ৩৪ রান করে। সুবিধা করতে পারেননি ওয়েসলে মাধেভেরে, তিনি মুস্তাফিজের শিকারে পরিণত হন ৩ রানে।
ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া চাকাভা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের আগের দুই পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ইনিংস খেলেন হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। সেই মাঠেই আজ কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির দিকে ছুঁটছিলেন। ব্যক্তিগত ৭৮ রানের মাথায় তাসকিন আহমেদকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছান ৮৪ রানে। এর পরেই যেন মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন চাকাভা। তাসকিনের ফুল লেংথ স্টাম্প সোজা বলটিতে বাজেভাবে ক্রস ব্যাটে ফ্লিকের মতো করার চেষ্টা করেন তিনি। ব্যাটের ধারেকাছে ছিল না বল, উপড়ে যায় স্টাম্প।
শেষদিকে সাইউদ্দিনের উপর চড়াও হন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ১১২ রান। ৪৯ বলে ফিফটির স্বাদ পাওয়া রাজা ৫৪ বলে ৫৭ ও ৩৮ বলে অর্শধতক করা বার্ল ৪৩ বল খেলে ৫৯ রানে আউট হলে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা স্কোর বোর্ডে তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি। এতে ৫০তম ওভারে অল-আউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে ২৯৮ রানের পুঁজি পায়। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯৯ রানের।