ভৌগলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তুরস্কে কাল রোববার (১৪ মে) হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জন্য এবারের নির্বাচনটিকে ‘কঠিন পরীক্ষা’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ গত ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এবার দেশটির ছয়টি রাজনৈতিক দল জোট বেঁধেছে। আর এ জোটের নেতৃত্বে রয়েছেন কেমাল কিলিকদারোগলো। তুরস্কের ইতিহাসে এর আগে কখনো এতগুলো দলকে ‘এক হতে’ দেখা যায়নি।
‘শান্ত ও নরম সুরে’ কথা বলা মানুষ কেমাল এবার এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করে দিতে পারেন— বিভিন্ন জরিপে ওঠে এসেছে এমনই তথ্য।
শুক্রবার (১২ মে) রাজধানী আঙ্কারায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দেন ৭৪ বছর বয়সী কেমাল। এই সমাবেশে তিনি শক্তিশালী বক্তব্য দেন। কূটনীতিক থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়া কেমাল দাবি করেছেন, রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তার নিজ স্বার্থ হাসিলে পার্লামেন্টের ক্ষমতা কমিয়েছেন। ধর্মনিরপেক্ষ এ রাজনীতিবিদ কথা দিয়েছেন, যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে পার্লামেন্টের পুরোনো ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবেন।
নির্বাচনের আগে যেসব জরিপ চালানো হয়েছে, তাতে দেখা গেছে কেমাল এরদোয়ানের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছেন। কেমালের সমর্থকরা ‘স্বপ্ন’ দেখছেন তাদের প্রার্থী কালকের নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন। মানে নির্বাচনের প্রথম দফাতেই তার জয় নিশ্চিত হয়ে যাবে।
তুরস্কের নির্বাচনী বিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে একজন প্রার্থীকে এককভাবে ৫০ শতাংশ বা এর বেশি ভোট পেতে হবে। এমনটি যদি না হয় তাহলে যে দু’জন প্রার্থী সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তাদের মধ্যে দুই সপ্তাহ পর রানঅফ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে কেমালের সমর্থকরা আশা করছেন, রানঅফ নয়— কালই এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট তিনি পাবেন।
তুরস্কে এবার প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন ৫০ লাখ তরুণ। তাদের মধ্যে একজন হলেন ফিরাত। তিনি কেমালেরর সঙ্গে যেসব দল জোট বেঁধেছেন তাদের প্রশংসা করেছেন। এ ভোটার বলেছেন রক্ষণশীল এবং জাতীয়তাবাদী দলগুলো একই প্লাটফর্মে এসেছে এটি সবার জন্য বেশ ভালো একটি বিষয়।
কেমাল নিজে একজন ধর্মনিরপেক্ষ হলেও তিনি জানিয়েছেন, যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে তুরস্কে নারীদের হিজাব পরার যে অধিকার রয়েছে, এতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবেন না।
এদিকে এবারের নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনের মাত্র তিন আগে মুহারেম ইনস নামের এক প্রার্থী সরে দাঁড়ান। ধারণা করা হচ্ছে এ বিষয়টি এরদোয়ানের জন্য খারাপ হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি