সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুড়াকলিয়া গ্রামে দীর্ঘদিনের পানি সরবরাহের ড্রেন বন্ধ করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। একটি মহলের ইন্ধনে উক্ত স্থানে ঘর নির্মাণ করায় সম্প্রতি বৃষ্টির পানিতে ৪০ থেকে ৫০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পানি নিস্কাশন হলেও ঐ মহল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচারে করছে। এদিকে তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস এম তারেক সুলতান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মুড়াকলিয়া গ্রামের মৃত ফজলু রহমানের ছেলে আব্দুস সবুর সরদার, মৃত শামছুদ্দিন মোড়লের ছেলে আবু আজাদ মোড়ল, মৃত ছইল উদ্দীনের ছেলে আব্দুস সাত্তার মোড়ল, মৃত জেকের সরদারের ছেলে সাজ্জাদ সরদার, আনিস সরদারের ছেলে আব্দুর রহমান, আয়ুব সরদারের ছেলে শাহিনুর সরদার রবিবার সকালে জানান, বৃটিশ আমল থেকে এই ড্রেন দিয়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছে। হঠাৎ একই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ শেখের স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা জেসমিন নাহার তার পিতার পৈত্রিক সম্পত্তি উল্লেখ করে দীর্ঘদিনের পানি নিষ্কাশনের ড্রেনটি মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেয়। ইতোপূর্বে মাপ-জরিপ করে ড্রেনের রাস্তা বাদ রেখে এনামুল হককে ৪৫ ফুট এবং জেসমিন নাহারকে ৪৫ ফুট জায়গা ভোগদখলে রেখে আপোষ করা হয়।
এদিকে কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত আবেদন করলে শনিবার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) কে এবং ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেনকে নির্দেশ দেন। সহকারি কমিশনারের নির্দেশে রবিবার (৪ জুলাই) ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন ভুক্তভোগীদের সহায়তায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। এর ফলে পানি বন্দীদশা থেকে মুক্তি পায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। কিন্তু ঐ নারীসহ তার দোসররা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার করে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় জনগণ। তবে এ সময় জেসমিন নাহারের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তালা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন জানান, দীর্ঘদিনের পানি নিষ্কাশনের ড্রেনটি গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা জেসমিন নাহার একটি মহলের ইন্ধোনে মাটি ভরাট করে ড্রেন বন্ধ করে দেয়। ফলে ইতোপূর্বে ভারী বৃষ্টিতে এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাকে পানি নিষ্কাশনের অনুমতি দিলে স্থানীয় এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে তিনি পানি নিষ্কাশন করে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘব করেন। কিন্তু উক্ত ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে একটি মহল নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে, যেটি খুবই দুঃখজনক।
তালা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস এম তারেক সুলতান জানান, তিনি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওখানে দু’পক্ষের জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিলো। পরিদর্শনকালে পানিবন্দী দেখে আগে পানি নিস্কাশনের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেয়া হয়। পরে মাপ-জরিপ করে উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মীমাংসার কথাও বলা হয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই