খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

তামিম-সোহানের নৈপূণ্যে হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুয়ে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ওয়ানডেতে হোয়াইট ওয়াশ ২০০৬ সালে কেনিয়াকে দিয়ে শুরু, এরপর একে একে আরও ১২ বার এই স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে ২০০৯ সালের পর দেশের বাইরে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করা হয়ে উঠছিল না। সেই অপেক্ষা ঘোচালেন তামিম ইকবালের দল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের আগের দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ ছুঁয়ে ফেলে ২ ওভার হাতে রেখে। জয় পায় ৫ উইকেটে। তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ।

এটি বাংলাদেশের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫০তম জয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে জয়ের ফিফটি করলো বাংলাদেশ। এ জয়ে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে আরো ১০ পয়েন্ট নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের সুপার লিগের মোট পয়েন্ট ৮০। টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ১৫ পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।

শেষের দিকে তামিম-মাহমুদুল্লাহকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই চাপমুক্ত করেন মিঠুন ও শোহান। তবে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৫৭ বলে ৩০ রান করেন তিনি। কাজী নুরুল হাসান সোহানের দারুণ ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ। শেষে মুহুর্তে সোহানের সঙ্গী ছিলেন আফিফ হোসেন।

এরপর আর দলকে কোনো বিপদে পড়তে দেননি সোহান-আফিফ। ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছেড়েছেন তারা। সোহান ৩৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৫ আর আফিফ হোসেন ধ্রুব ১৭ বলে ৩ চার, এক ছক্কায় ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

এদিন সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি তামিম। তিনটি ছক্কা ও আটটি চারে ৯৭ বলে ১১২ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তামিমের ফেরার পরের বলেই ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নিজের ২০০তম ওয়ানডে ম্যাচে শূন্য রানে সাজঘরের পথে হাঁটেন তিনি।

করোনাকালীন ক্রিকেটে ফিরে বেশ কয়েকটি হাফ সেঞ্চুরি পেলেও সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া হয়নি তামিমের। অবশেষে ১১ ম্যাচ পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। টেন্ডাই চাতারার বলে চার মেরে ৮৮ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। যা তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি।

গেল ম্যাচে অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংস খেলার পর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও ভালো শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে বিতর্কিত এক আউটে ফিরতে হলো তাঁকে। লুক জংওয়ের আউট সাইড অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ আউট হয়েছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার।

যদিও সাকিবের দাবি ব্যাটে বলে স্পর্শ হয়নি। যে কারণে আম্পায়ার আউট দেয়ার পর খানিকটা হতাশা প্রকাশ করেছেন। সমান সংখ্যক একটি করে চার ও ছক্কায় ৪২ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরেন সাকিব।

উদ্বোধনী জুটিতে ৮৮ রান তোলেন লিটন ও তামিম। এই জুটিতে লিটনের অবদান ৩২ রান। মাধেভেরের বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ আউট হয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তাতে ভাঙে তাঁদের দুজনের ৮৮ রানের জুটি।

এর আগে দুপুরে হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। এ ম্যাচে রেজিস চাকাভার ক্যারিয়ার সেরা ৮৪ রানের সঙ্গে সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের ফিফটিতে আল-আউট হওয়ার আগে স্কোর বোর্ডে ২৯৮ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৯৯ রান।

এদিন একাদশে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে দীর্ঘদিন পর সুযোগ পান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। তাকে খেলাতে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামকে।

মাঠে ফিরেই ৩ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের শিকারও সমান ৩ উইকেট। তবে বল হাতে লজ্জার রেকর্ডের সঙ্গী হয়েছেন তিনি। এদিন ৮ ওভার বল করে ৮৭ রান সাইফউদ্দিন, যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। এতোদিন ৮৫ রান দিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে খরুচে বোলিং ছিল পেসার আল আমিন হোসেনের দখলে।

আগে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য খুব ভালো হয়নি। নমব ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পান সাকিব আল হাসান, তার বল সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ৮ রান করা তাদিওয়ানাশে মারুমানি। এরপর অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গ ৩৬ ও ডিওন মায়ার্সের সঙ্গে ৭১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে টেনে তোলেন রেগিস চাকাভা। টেলর ২৮ ও মায়ার্স আউট হন ৩৪ রান করে। সুবিধা করতে পারেননি ওয়েসলে মাধেভেরে, তিনি মুস্তাফিজের শিকারে পরিণত হন ৩ রানে।

ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া চাকাভা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের আগের দুই পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ইনিংস খেলেন হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। সেই মাঠেই আজ কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির দিকে ছুঁটছিলেন। ব্যক্তিগত ৭৮ রানের মাথায় তাসকিন আহমেদকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছান ৮৪ রানে। এর পরেই যেন মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন চাকাভা। তাসকিনের ফুল লেংথ স্টাম্প সোজা বলটিতে বাজেভাবে ক্রস ব্যাটে ফ্লিকের মতো করার চেষ্টা করেন তিনি। ব্যাটের ধারেকাছে ছিল না বল, উপড়ে যায় স্টাম্প।

শেষদিকে সাইউদ্দিনের উপর চড়াও হন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ১১২ রান। ৪৯ বলে ফিফটির স্বাদ পাওয়া রাজা ৫৪ বলে ৫৭ ও ৩৮ বলে অর্শধতক করা বার্ল ৪৩ বল খেলে ৫৯ রানে আউট হলে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরা স্কোর বোর্ডে তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি। এতে ৫০তম ওভারে অল-আউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে ২৯৮ রানের পুঁজি পায়। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৯৯ রানের।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!