প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়নের বেশে প্রথম মাঠে নেমেই হোঁচট খাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। পাল্টা আক্রমণ নির্ভর ফুটবলে দারুণ চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল নিউক্যাসল ইউনাইটেড। তবে ফেররান তরেসের হ্যাটট্রিকে বারবার রং বদলানো ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই ফিরেছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
প্রতিপক্ষের মাঠে শুক্রবার রাতে সাত গোলের রোমাঞ্চ ছড়ানো লিগ ম্যাচটি ৪-৩ ব্যবধানে জিতেছে সিটি।
লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে সিটির এটি টানা দ্বাদশ জয়, নতুন রেকর্ড। অ্যাওয়ে ম্যাচে টানা জয়ের আগের রেকর্ডটি ২০০৮ সালে প্রথম গড়েছিল চেলসি। ২০১৭ সালে সিটি সেটি স্পর্শ করলেও ভাঙতে পারেনি। এ মাসের প্রথম দিন ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে জিতে আবারও সেটি স্পর্শ করে তারা এবং এবার গড়ল নতুন কীর্তি।
গত শনিবার চেলসির বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হেরেছিল সিটি। তবে তিন দিন পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হেরে যাওযায় শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় গুয়ার্দিওলার দলের।
প্রতিপক্ষের ‘গার্ড অব অনারে’ মাঠে নামা সিটি শুরু থেকে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করে। তবে, খেলার ধারার বিপরীতে ২৫তম মিনিটে গোল খেয়ে বসে দলটি। কর্নারে জোরালো হেডে বল জালে পাঠান সুইডেনের ডিফেন্ডার এমিল ক্রাফথ।
১০ মিনিট পর ব্যবধান হতে পারতো দ্বিগুণ; তবে ইংলিশ মিডফিল্ডার জনজো শেলভির দারুণ ফ্রি কিক রক্ষণ প্রাচীরের ওপর দিয়ে গিয়ে বাধা পায় ক্রসবারে।
৩৯তম মিনিটে সেই ভাগ্যের জোরোই সমতায় ফেরে সিটি। জোয়াও কানসেলোর শট প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়।
প্রথমার্ধে ৮০ শতাংশের ওপর বল দখলে রাখা সিটি তিন মিনিট পর এগিয়ে যায়। বাঁ দিক থেকে ইলকাই গিনদোয়ানের ফ্রি কিকে লাফিয়ে দারুণভাবে ফ্লিক করেন তরেস, গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল খুঁজে পায় ঠিকানা।
পাল্টা আক্রমণে মাঝেমধ্যেই ভীতি ছড়ানো নিউক্যাসল সমতা টানে বিরতির আগে, জোয়েলিন্তনের সফল স্পট কিকে। এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টিটি পায় তারা।
৬২তম মিনিটে নিউক্যাসলকে এগিয়ে নেন জো উইলক। তার স্পট কিক গোলরক্ষক স্কট কার্সন রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি, ফিরতি বল ছুটে গিয়ে জালে পাঠান তরুণ এই মিডফিল্ডার। তাকেই ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা।
নিউক্যাসলের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য দুই মিনিটও স্থায়ী হয়নি। পরপর দুই মিনিটে দুবার জালে বল পাঠিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তরেস। বাকি সময় আর তেমন কোনো ভীতি ছড়াতে পারেনি পুরো ম্যাচে মাত্র ১৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেও প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখা নিউক্যাসল। ৩৬ ম্যাচে ২৬ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে শিরোপাধারীদের পয়েন্ট হলো ৮৩।
সমান ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৪ পয়েন্ট কম নিয়ে তৃতীয় স্থানে লেস্টার সিটি। চার নম্বরে চেলসির পয়েন্ট ৬৪।
এক ম্যাচ কম খেলা লিভারপুল ৬০ পয়েন্ট নিয়ে আছে পাঁচ নম্বরে। ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৬ নম্বরে নিউক্যাসল।
আগেই অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেছে ফুলহ্যাম, ওয়েস্ট ব্রমউইচ অ্যালবিওন ও শেফিল্ড ইউনাইটেডের।