খুলনা বিএনপি নেতারা বলেছেন, তরিকুল ইসলাম ছিলেন একজন আদর্শবাদী রাজনীতিবিদ। মাটি মানুষের প্রতি অঙ্গীকার থেকে যারা রাজনীতি করেন, তাদের জীবন ধারায় সাফল্য ব্যর্থতা আর জেল-জুলুমের যে পর্বগুলো অনিবার্য হয়ে উঠে তরিকুল ইসলামেরও তাই। ঔপনিবেশিক আমলে জন্ম নেয়া এ ব্যক্তির পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের শিক্ষা জীবনকালে আদর্শবাদী রাজনীতির প্রধান অ্যাজেন্ডা ছিল বৈষম্য ও শোষণমুক্তি। ছাত্রজীবনেই তিনি সেই রাজনীতিতেই দীক্ষা নেন। ১৯৬৩-১৯৬৪ সালে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৬২ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজের জরাজীর্ণ শহীদ মিনার মেরামত করতে গেলে তৎকালীন সামরিক সরকার তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ১৯৬৮ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন করে নয় মাস রাজশাহী এবং যশোরে কারাভোগ করেন তরিকুল ইসলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়ায় আবারো কারাভোগ করেন তিনি। এরশাদ শাসন এবং ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময়ও কারাবরণ করতে হয় তাকে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং প্রগতিশীল রাজনীতির বলিষ্ট নেতা, দক্ষিণবঙ্গের সিংহ পুরুষ বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রায়ত সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মরহুম তরিকুল ইসলামের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল পুর্ব আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় দলীয় কার্যালয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ভাবধারার প্রতি একনিষ্ঠ ছিলেন তরিকুল ইসলাম। বাম ছাত্র রাজনীতির মাঠকর্মী থাকার পর রাজনৈতিক জীবনে স্থানীয় নেতা, সেখান থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নীতিনির্ধারক হিসেবে ভূমিকা রেখেছিলেন তরিকুল ইসলাম। মওলানা ভাসানীর রাজনীতির বৈশিষ্ট্য ছিল ধর্মবিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার সাথে শোষণমুক্ত সমাজ কাঠামোকে একাত্ম করে তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা। ভাসানী আবুজর গিফারী র:-এর বিশ্বাস এবং মাও সে তুং-এর শোষণমুক্তির রাজনীতি থেকে নিজের কর্মপ্রেরণা নিয়েছিলেন। এই মজলুম জননেতা সারা জীবন কাটিয়েছেন সংগ্রাম ও জনগণের কাতারে থেকে। তরিকুল ইসলাম যখন যশোর এম এম কলেজের ছাত্রনেতা ছিলেন, তখন মওলানার সেই আদর্শ তার গভীর মন ও মননে প্রতিষ্ঠিত হয়। তরিকুল ইসলাম বিএনপি সরকারের সময় তথ্য, সমাজকল্যাণ, রেল ও যোগাযোগ, টিঅ্যান্ডটি, খাদ্য এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ কেবিনেটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আলোচনা শেষে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মহানগর, থানা, ওয়ার্ড, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/কেডি