স্নাতকে (বিবিএ) অসাধারণ ফলাফলের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্বর্ণপদকে ভূষিত হয়েছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সরাপপুর গ্রামের মো. নাজমুছ সাকিব এবং সদর উপজেলার দক্ষিণ কাটিয়া গ্রামের মো. মাসুদ রানা ও কুশখালি গ্রামের আল মামুন হোসেন।
এর মধ্যে নাজমুছ সাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্নেল মালেক স্বর্ণপদক ২০১৮ এবং মাসুদ রানা অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম স্বর্ণপদক ২০১৯ এ ভূষিত হয়েছেন।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আব্দুল হামিদ এর কাছ থেকে এ স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন তারা।
সম্প্রতি নাজমুছ সাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এ শিক্ষকতা করেছেন। অন্যদিকে মাসুদ রানা রাজধানীর স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর অ্যাডজান্ট ফ্যাকাল্টি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর আল মামুন হোসেন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী।
নানান অর্জনে শিক্ষাজীবন বর্ণিল করেছেন সকলেই৷ নাজমুছ সাকিব জিপিএ ৫.০০ পেয়ে ২০১২ সালে মাধ্যমিক ও ২০১৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলে তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। এর আগে ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে তিনি ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করেন। ২০১৫ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হন।
অন্যদিকে মাসুদ রানা সকল বিষয়ে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে ২০১৩ সালে সাতক্ষীরা পিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৫ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। মাধ্যমিকের ফলাফলে তিনি যশোর শিক্ষাবোর্ডে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। ২০১৬ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হন।
নাজমুছ সাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে ২০১৯ সালে স্নাতক ও ২০২১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। স্নাতকোত্তরে তিনি সর্বোচ্চ ফলাফল সিজিপিএ ৪.০০ অর্জন করেন এবং উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এর আগে ডিনস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
মো. মাসুদ রানাও একই বিভাগ থেকে ২০২০ সালে স্নাতক ও ২০২২ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। স্নাতকোত্তরে তিনি সর্বোচ্চ ফলাফল সিজিপিএ ৩.৯৬ অর্জন করেন এবং উভয় পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। শিক্ষাজীবনের অসাধারণ কৃতিত্বস্বরুপ অস্ট্রেলিয়া সরকার তাকে ‘অ্যানডিয়াভর লিডারশিপ প্রোগ্রাম অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন এবং সপ্তাহব্যাপী স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে আমন্ত্রণ জানান।
ছাত্রজীবনে দু’জনেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি উভয়ই ব্যবসায় সংক্রান্ত গবেষণায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে তাদের বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
নাজমুছ সাকিব তার নিজ ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সামাজিক সংগঠন ‘মাতৃভূমি শোভনালী’ এর প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক। অন্যদিকে মাসুদ রানা তার নিজ জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব সাতক্ষীরা (ডুসাস) এর সাংগঠনিক সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন করেছেন।