ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আজ (শুক্রবার)। বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাতটি বিভাগীয় পর্যায়ের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, এবারের ‘ক’ ইউনিটে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ ১৭ হাজার ৯৫৭ জন। আর মোট আসন সংখ্যা ১৮১৫টি। সেক্ষেত্রে এ ইউনিটে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন ৬৪ দশমিক ৯৯ জন।
‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। এমসিকিউ পরীক্ষা ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষা ৪৫ মিনিট অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের ফলাফলের (জিপিএ) উপর ২০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর মধ্যে ‘ক’ ইউনিটে ঢাবিতে পরীক্ষা দেবেন ৫৮ হাজার ৬০৩ জন, চবিতে ১১ হাজার ২১৭ জন, রাবিতে ১৪ হাজার ৩২৮ জন, খুবিতে ৮ হাজার ৯২২ জন, শাবিপ্রবিতে ৩ হাজার ৩০৫ জন, বেরোবিতে ১০ হাজার ৩৫১ জন, ববিতে ৩ হাজার ৪২৫ জন, বাকৃবিতে ৭ হাজার ৮০৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন।
আগের মতো এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে ৬টি বিষয় পদার্থ বিজ্ঞান (আবশ্যিক), রসায়ন (আবশ্যিক), গণিত, জীববিজ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি বিষয়গুলোর উপর প্রশ্ন রাখা হবে। এ ৬টি বিষয়ের মধ্যে পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন আবশ্যিক পূরণ করতে হবে। বাকি চারটি বিষয়ের মধ্যে পরীক্ষার্থী ইচ্ছা করলে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৪র্থ বিষয়ের পরিবর্তে বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য মোট বরাদ্দ থাকবে ২৫ নম্বর। যার মধ্যে এমসিকিউ অংশে থাকবে ১৫ নম্বর ও লিখিত থাকবে ১০ নম্বর।
এমসিকিউ অংশে মোট নম্বর ৬০ এবং সময় ৪৫ মিনিট। এ অংশে প্রতিটি বিষয়ের উপরে থাকবে মোট নম্বর ১৫ করে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.২৫ নম্বর, তা বিষয়ভিত্তিকভাবে সমন্বয় করা হবে।
লিখিত অংশে মোট নম্বর থাকবে ৪০, যার জন্য সময় বরাদ্দ থাকবে ৪৫ মিনিট। প্রতিটি বিষয়ে নম্বর থাকবে ১০ করে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ২ থেকে ৫ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
পরীক্ষা উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জালিয়াতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, এ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অনিয়ম, জালিয়াতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি থাকবে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদা তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। আশা করছি কোনো ধরনের অনিয়ম হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, যেহেতু ঢাকার বাইরেও এবার পরীক্ষা হবে, সেজন্য আমরা বাড়তি মনিটরিং ব্যবস্থাও রেখেছি। পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাবি থেকে নিয়ন্ত্রণ হবে এবং প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। এছাড়া সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা যারা পরীক্ষা নিয়ে কাজ করে তাদের একটা সতর্ক দৃষ্টিও আছে। সবমিলিয়ে আমরা আশা করছি, কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি ছাড়াই ভালোভাবে নিতে পারব।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৭১৪৮টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৪০টি। এ হিসেবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বে ৪৫ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া খ-ইউনিটের ২৩৭৮টি আসনের বিপরীতে মোট আবেদনকারী ৪৭ হাজার ৬৩২ জন, গ-ইউনিটের ১২৫০টি আসনের বিপরীতে ২৭ হাজার ৩৭৪ জন, ঘ-ইউনিটে ১৫৭০ আসনের বিপরীতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮১ জন এবং চ-ইউনিটে ১৩৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১৫ হাজার ৪৯৬ জন শিক্ষার্থী।
খুলনা গেজেট/ টি আই