খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ
জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস

নির্বাচন কখন হবে সেটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের নয়

গেজেট ডেস্ক 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়।

আজ (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, একটা বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী, কখন আমাদের সরকার বিদায় নেবে। এটার জবাব আপনাদের হাতে, কখন আপনারা আমাদেরকে বিদায় দেবেন। আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই। আমাদের নিজ নিজ পেশায় আমরা আনন্দ পাই। আমাদের উপদেষ্ঠামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাবো যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়- আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যে কোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব।

ড. ইউনূস বলেন, একটা বিশেষ ব্যাপারে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরের অনেক দুঃখ- কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেন তাহলে এই দুঃখ ঘোচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের যা চাওয়া তা লিখিতভাবে আমাদের দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসংগতভাবে যা কিছু করার আছে আমরা অবশ্যই তা করব।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ঘেরাও করে আমাদের কাজে বাধা দেবেন না। সবাই মিলে তাদের বোঝান তারা যেন এ সময়ে তাদের অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাদের দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধা না দেন।

কোটা আন্দোলনে নিহত সব শহিদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সব শহিদ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।পাশাপাশি আহতদের সমস্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার। বর্তমান সরকারে ছাত্র প্রতিনিধি থেকে দুজন উপদেষ্টা আছেন। তাদের মাধ্যমে আহত ও নিহতদের তালিকা প্রস্তত করা হচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন, আমরা অনুধাবন করছি আমাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। প্রত্যাশা পূরণে সহযোগিতা ও সময় দিতে হবে আমাদের। নিশ্চয় আপনাদের মনে আছে, আমাদের সরকার যখন দায়িত্ব নেই তখন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর পরিস্থিতি ভালো ছিল না। এটা অল্প সময়ের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে।

ছাত্র–জনতার স্বপ্ন পূরণে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র–জনতা স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল, সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি অঙ্গীকারাবদ্ধ। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলনে নিহত ছাত্র–জনতাকে স্মরণ এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ভাষণ শুরু করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

স্বৈরাচারের হাতে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের হাতে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। এতদিন দেশে যেভাবে দুর্নীতি হয়েছে, তা বোঝাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিওনেরও ৪০০ কোটি টাকার মালিক হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে স্বৈরাচার তাঁর নিজের, পরিবারের ও দলের কিছু মানুষের স্বার্থ হাসিলের পথ তৈরি করে দিয়েছে। আর্থিক খাত ও শেয়ার বাজারে লুটপাটের কথা উল্লেখ করেন তিনি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

হত্যা-গুম-অপহরণসহ আয়নাঘরের মতো সব অপকর্মের বিচার হবে

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, অপহরণ এবং আয়নাঘরের মতো চরম ঘৃণ্য সব অপকর্মের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশকে আর কোনো দিন কেউ যেন কোনো পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত না করতে পারে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিচার বিভাগকে দুর্নীতি ও দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, অপহরণ এবং আয়নাঘরের মতো চরম ঘৃণ্য সব অপকর্মের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার নিশ্চিত করা হবে। তালিকা প্রস্তুত করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে। দুর্নীতি ও সম্পদ পাচারের বিচার করা হবে।

আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে জনমুখী ও দলীয় প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিতামূলক কাঠামো সৃষ্টির লক্ষ্যে পুলিশ কমিশন গঠন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন, দায়িত্বপ্রাপ্ত সব সংস্থা ও জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে কমিশনের নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। বাংলাদেশকে আর কোনো দিন কেউ যেন কোনো পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত না করতে পারে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রবাসীদের আসা-যাওয়ায় সম্মান-মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানে বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। জাতি তাদের অবদান বিশেষভাবে স্মরণ করবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে আমরা তাদের অংশগ্রহণ চাইব। আমাদের একটি লক্ষ্য হবে বিদেশগামী এবং প্রত্যাবর্তনকারী প্রত্যেক প্রবাসী শ্রমিককে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে দেশে আসা এবং যাওয়া নিশ্চিত করা। সে ব্যাপারে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ড. ইউনূস বলেন, বিদেশে অবস্থানরত সবার কাছে আমার আবেদন, তারা যেন তাদের উপার্জিত অর্থ অফিসিয়াল চ্যানেলে দেশে পাঠান। দেশের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে এ অর্থ বিশেষভাবে প্রয়োজন। কী কী ব্যবস্থা নিলে তাদের জন্য অফিসিয়াল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হবে, সেটা সম্বন্ধে আমরা তাদের পরামর্শ নেব।

ঘুষের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ

সমাজকে ঘুষমুক্ত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সারা দেশ ঘুষের মহাসমুদ্রে নিমজ্জিত। কীভাবে ঘুষ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি, তার জন্য আমাদের পরামর্শ দিন। শুধু এই কাজটা নিয়ে অগ্রসর হতে পারলেই আমি মনে করি, দেশের জন্য এই সরকার একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছে বলে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি কথা দিচ্ছি, এ ব্যাপারে আমি আমার সর্বশক্তি নিয়োজিত করব।

তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে

ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। ফ্যাসিবাদী সরকার গণমাধ্যমের ওপরও দলীয়করণ ও নির্যাতনের বোঝা চাপিয়েছিল। জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তথ্যের প্রবাহে বিদ্যমান আইনি ও অন্যান্য বাধা অপসারণ করা হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করে এমন সব আইনের নিপীড়নমূলক ধারা সংশোধন করা হবে।

বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশি সংবাদকর্মীদের এ দেশে আসার ওপর যে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা ছিল ইতোমধ্যে আমরা তা তুলে নিয়েছি। বিদেশি সাংবাদিকদের দ্রুত ভিসা দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমকর্মীরা নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা চালিয়ে যাবেন।

মিথ্যা ও গায়েবি সব মামলা প্রত্যাহার হবে

ড. ইউনূস বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে যে শত শত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়েছিল তার অধিকাংশ প্রত্যাহার করেছি এবং আটক ছাত্র-জনতার মুক্তিলাভের ব্যবস্থা করেছি। পর্যায়ক্রমে মিথ্যা ও গায়েবি সব মামলার ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানুষকে দুঃসহ ভোগান্তি থেকে মুক্ত করা হবে।

উপদেষ্টারা সম্পদের বিবরণ দেবেন, কর্মকর্তাদের জন্যও বাধ্যতামূলক

ড. ইউনূস বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছে। আমাদের সব উপদেষ্টা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করবেন। এটি সব সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সব উপদেষ্টা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে এটি সব সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রেও নিয়মিত এবং বাধ্যতামূলক করা হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে প্রতিশ্রুত ন্যায়পাল নিয়োগে অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হবে।

গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হবে

গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে সফল পরিণতি দিতে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা খাত এবং তথ্য প্রবাহে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা হবে। এর লক্ষ্য হবে দুর্নীতি, লুটপাট ও গণহত্যার বিরুদ্ধে একটি জবাবদিহিতামূলক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা।

কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে

কৃষি খাতের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে কৃষকের স্বার্থ যেন সুরক্ষিত থাকে, কৃষক যেন তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করা হবে। প্রবাসী শ্রমিকরা যেভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছেন মুক্তিকামী জনগণ তা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। তাদের প্রতি সব পর্যায়ে সম্মানজনক আচরণ নিশ্চিত করা হবে।

স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত খাত। জনগণের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। এই খাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সেখানে সরকারি ডাক্তারসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। স্বাস্থ্যসেবা যাতে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত না থাকে, দেশের সব অঞ্চলের মানুষ সমান স্বাস্থ্যসেবা পায়, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।

কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের স্বপ্নকে ব্যাহত করতে না পারে

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গণরোষের মুখে ফ্যাসিবাদী সরকার দেশ ত্যাগ করার পর আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার থাকবে পুরোপুরি সুরক্ষিত। আমাদের লক্ষ্য একটিই— উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। আমরা এক পরিবার। আমাদের এক লক্ষ্য। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের স্বপ্নকে ব্যাহত করতে না পারে সেজন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত

ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করার মাত্র দুই সপ্তাহ শেষ হলো। কর্ম যাত্রার প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে আপনাদের কাছ থেকে যে সমর্থন পাচ্ছি সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আমরা অনুধাবন করছি যে আমাদের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা অনেক। এ প্রত্যাশা পূরণে আমরা বদ্ধপরিকর। যদিও দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রহীনতা, ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের জন্য পর্বতসম চ্যালেঞ্জ রেখে গিয়েছে। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত। আজ আমি সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করতে আপনাদের সামনে এসেছি। শুধু আমি বলবো আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

ধৈর্য ধরুন, দাবি আদায়ে এখনই জোর করবেন না

সবাইকে ধৈর্য ধরে নতুন বাংলাদেশ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এখনই সব দাবি পূরণ করার জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তিবিশেষকে হুমকির মধ্যে ফেলা, মামলা গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই একধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা তা থেকে বের হতে হবে। ছাত্র–জনতার বিপ্লবের গৌরব ও সম্ভাবনা এসব কাজে ম্লান হয়ে যাবে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাও এতে ব্যাহত হবে।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!