ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের প্রধান ও একমাত্র আইনজীবী হিসেবে খুরশীদ আলম খানকে ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, শ্রম আদালতে চলমান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিপ্তরের প্রধান ও একমাত্র আইনজীবী হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে। আমি মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) আদালতে যাব।
এর আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিপ্তরের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হায়দার আলীকে নিয়োগ দেন সরকার। কিন্তু এ অবস্থায় সরকারের নিয়োগ করা আইনজীবী থাকলে মামলা লড়বেন না বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম।
এদিন দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে চ্যানেল 24-কে তিনি বলেন, একটি মামলা লড়তে দুজন আইনজীবীর প্রয়োজন নেই। আমি কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিপ্তরকে জানিয়ে দিয়েছি, যদি তারা নতুন আইনজীবী নিতে চায় তবে আমি এ মামলা লড়বো না।
তিনি আরও বলেন, একটি মামলা দুজন আইনজীবী লড়লে মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর আমার জন্যেও কষ্ট, আমাকে হাইকোর্ট-আপিল বিভাগ ফেলে আপনাদের মামলার জন্যে যেতে হয়। আপনাদের যদি অন্য আইনজীবী থাকে তবে তিনি এটি লড়ুক, আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
উল্লেখ্য, শ্রমিকদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় আরও ১৮টি মামলা হয়েছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ জন শ্রমিক বাদী হয়ে পৃথকভাবে মামলাগুলো করেন।
শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা মামলাগুলো গ্রহণ করে আগামী ১৫ ও ১৬ অক্টোবর ড. ইউনূসকে হাজির হয়ে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মোট ২১ কোটি ৪১ লাখ ১৭ হাজার ১৬৩ টাকা পাওনা পরিশোধ না করায় শ্রম আইন ২০০৬-এর ২১৩ ধারা লঙ্ঘিত হওয়ায় এই মামলাগুলো করেন বাদীরা। গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ১৭ জন ও বর্তমান একজন কর্মচারী এসব মামলার বাদী।
জানা যায়, কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী, লভ্যাংশের ৫ শতাংশ হারে পাওনা বুঝিয়ে না দেয়ায় এই মামলাগুলো করা হয়।
তারও আগে গত ৬ জুন একটি মামলায় ডক্টর ইউনুসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন একই আদালত। ওই মামলায় অভিযোগ গঠনের পর ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে সাক্ষীগ্রহণ চলছে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। ওই মামলাটিও বিচারাধীন।