খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

ডুমুরিয়ার পশুর হাটে প্রচুর গরু, বিক্রি কম

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া

ডুমুরিয়ার পশুর হাট গুলোতে প্রচুর গরু, বিক্রি কম। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ খামারীরা। তবে প্রচুর গরুতে কোরবানির পশুর হাট গুলো জমে উঠেছে। শুক্রবার চুকনগর হাটে প্রচুর গরু উঠেছে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতাও এসেছেন গরু কিনতে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে গরুর দর-কষাকষি চলছে। দামে মিললে ক্রেতারা কিনছেন, না মিললে চলে যাচ্ছেন। এদিকে হাটে প্রচণ্ড রোদ থাকায় অনেকে ক্লান্ত হয়ে হাটে থাকা গাছের নিচে বসে পড়েছেন।

উপজেলার সীমান্তবর্তী পশুর হাটটি হলো আঁঠারমাইলে। গত সোমবার এ হাটে প্রচুর গরু ওঠে। বিক্রি ভাল ছিল। উপজেলার চাকুন্দিয়া গ্রামের মোজাম আলী গাজী জানায়, তিনি একটি ক্রস গরু নিয়ে আসেন আঠারমাইল হাটে। গরুটি তিনি ২লক্ষ ১৩হাজার টাকা বিক্রি করেন।

মঙ্গলবার ছিল চুকনগর গরু হাট। প্রচুর গরু ওঠে এ হাটে। আঁঠারমাইলের তুলনায় এখানে গরু বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম ছিল। গত ৭ জুলাই খর্নিয়া ও শাহাপুর পশুর হাট উদ্বোধন করা হয়। তিনদিন ধরে এ পশুর হাট চলবে। বৃহস্পতিবার খর্নিয়া পশুর হাটে প্রচুর গরু আসে। দুপুর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত আশানুরূপ পশু বিক্রি হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় পর কম গরু বিক্রি হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছে খর্নিয়া হাট মালিক আশরাফ হোসেন।

রানাই গ্রামের কবিরুল ইসলাম বলেন, আমার একটি গরু বিকেলে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দাম হলেও সন্ধ্যার পর ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার বেশী বলেনি। নিরুপায় হয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। চুকনগর গ্রামের রায়হান উদ্দীন সরদার, চাকুন্দিয়া গ্রামের মাসুদ রানা, হানেফ গাজী বলেন, বিকেলে তাদের গরু দাম বেশি বললেও সন্ধ্যার পর গরু প্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা কম দাম বলছে ক্রেতারা।

ভদ্রদিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, আছরের নামাজ পড়ে গরু কিনতে খর্ণিয়া হাটে এসেছি। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে একটি গরু মালিক ৬৫ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু অনেক কষাকষির পর ৫২ হাজার টাকায় গরুটি আমাকে দিয়েছেন। এছাড়া খর্ণিয়া হাটে সর্বোচ্চ একটি গরুর মুল্য ৪ লক্ষ টাকা দাম হয়। কিন্তু সর্বশেষ গরুটি বিক্রি হয় নি।

একইভাবে গরুর কাঙিক্ষত দাম না পেয়ে কেশবপুর উপজেলার হাবিবুর রহমান মোড়ল তার একটি গরু ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, গরুর দাম এক লাখ ৫০ হাজার টাকা চেয়েছি। কিন্তু ক্রেতারা এক লাখ ২০ হাজার বলে। এই দামে গরু বিক্রি করলে লোকসান হবে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চুকনগর হাটে এবার প্রচুর গরু উঠেছে। ক্রেতার আনাগোনাও বেশি। তবে বিক্রেতাদের কাছে গরুর দাম কাঙিক্ষত নয়। এতে গরু বিক্রি না করে বিক্রেতারা হাট থেকে ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন।

হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা ও হাট ইজারাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে ব্যাপারীরা এই হাট থেকে গরু কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, সিলেটসহ দেশের বড় বড় শহরে নিয়ে যান। কিন্তু এবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেটের ব্যাপারীরা আসেননি। অন্য অঞ্চল থেকে ক্রেতারা আসলেও গরুতে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত দাম।

গরুর ব্যাপারী রফিকুল ইসলাম গাজী বলেন, হাটে পাঁচটি উন্নত জাতের গরু বিক্রি করতে এনেছি। দাম ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত হাঁকিয়েছি। তার মধ্যে একটি মাত্র গরু ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন সেই দামে গরু বিক্রি করলে গরু প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লোকসান হবে। তাই বাধ্য হয়ে অন্য চারটি গরু ফেরত নিয়ে যাচ্ছি।

খুলনা থেকে এই হাটে গরু কিনতে এসেছেন ওয়াসিম ব্যাপারী। তিনি বলেন, আমি এই হাটে ৩২ থেকে ৩৫টি গরু কেনার টার্গেট নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই টার্গেট পূরণ নাও হতে পারে। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ১৫টি গরু কিনেছি। সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকায় এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ১৫টি গরু কিনেছি।

এদিকে খর্ণিয়া গরু হাটে লাঠি বিক্রি করতে এসে তিন বালক সকলের নজর কেড়েছে। তারা পুরো বাজারে ঘুরে ঘুরে প্রতি পিচ ৫ টাকা দরে লাঠি বিক্রি করেছে।

হাটের ইজারাদার গাজী নজরুল ইসলাম, মজিবার মোল্যা বলেন, হাটে প্রচুর গরুর আমদানি হয়েছে। কিন্তু বিক্রি কম। কোরবানির পশুর হাট সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য হাটে পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। তাছাড়া জাল টাকা শনাক্তের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে কয়েকটি ব্যাংকের অফিসাররা এসেছেন। হাট সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। হাটে কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা অসুস্থ হলে তাদের জন্য একজন চিকিৎসক আছে। গরুর জন্য ভেটেরিনারি ডাক্তার আছে।

উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহমুদা সুলতানা বলেন, তুলনামূলকভাবে এবছর পশু ক্রয় বিক্রয় কম। তবে উপজেলার প্রত্যেকটি হাট আমরা মনিটরিং করছি।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!