উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে ভোট হবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের তিন নেতাই কোটিপতি। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আজগর বিশ্বাস তারার সম্পদ সবচেয়ে বেশি। আর সম্পদ কম থাকলেও আয় সবার থেকে বেশি ছাত্রদল নেতা অ্যাডভোকেট মনিবুর রহমান নয়নের। প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তারা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্পদের এই বিবরণী জমা দিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। সবাই স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রার্থীরা হলেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী এজাজ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও আবাসন ব্যবসায়ী আজগর বিশ্বাস তারা (তারা বিশ্বাস), গত নির্বাচনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা সরোয়ার এবং প্রবীণ বিএনপি নেতা মোল্লা আবুল কাশেমের ছেলে, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিবুর রহমান নয়ন।
হলফনামায় দেখা গেছে, মুুনিবুর রহমান নয়ন এলএলএম উত্তীর্ণ। ঠিকাদারিকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার বার্ষিক আয় ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩২৮ টাকা। তারা বিশ্বাস স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ, বছরে তার আয় ২১ লাখ টাকা। মোস্তফা সরোয়ার বিএ পাশ, তার বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এবং গাজী এজাজ আহমেদ এইচএসসি পাশ। বছরে ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা আয়ের হিসেব দিয়েছেন এজাজ।
আরও পড়ুন : তেরখাদা, দিঘলিয়া ও ফুলতলার চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কার কত সম্পদ
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ডুমুরিয়ার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আজগর বিশ্বাস ‘বিশ্বাস প্রপার্টিজ’ সহ ৫টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। কৃষি খাত থেকে বছরে তার আয় ১ লাখ টাকা এবং ব্যবসা থেকে ২০ লাখ টাকা। মোট প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পদের মালিক তিনি।
তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৫০ লাখ টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ টাকা, শেয়ার ৬ লাখ টাকা, ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ২টি প্রাইভেটকার, ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫০ ভরি স্বর্ণ, ১২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ১৫ লাখ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১ কোটি টাকা মূল্যের ৫ বিঘা কৃষি জমি, ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ৩০ শতক অকৃষি জমি, ২০ লাখ টাকা মূল্যের দালান, ৩০ লাখ টাকা মূল্যের এপার্টমেন্ট ও ১০ লাখ টাকা মূল্যের মৎস্য খামার।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের বছরে আয় কৃষি খাত থেকে ২০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মানী ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ট্রাকের ব্যবসা থেকে ৫ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
মোট সম্পদ রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে দেড় লাখ টাকা, ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার ট্রাক, উপহার হিসেবে পাওয়া ৪৫ তোলা স্বর্ণ, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের টিভি এসি ও মোবাইল, ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৩ লাখ টাকা মূল্যের ০.০৫ একর কৃষি জমি, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ০.১৮ একর জমি।
ডুমুরিয়ার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোস্তফা সরোয়ারের বছরে আয় কৃষি খাত থেকে ৫৬ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে ৭ লাখ টাকা।
মোট ২ কোটি ১৪ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে তার। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে হাতে নগদ ১ কোটি ৪ লাখ টাকা, ৩ হাজার ৫০০ ইউএস ডলার, ২৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের প্রাইভেটকার, ২৫ ভরি স্বর্ণ, ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ৩০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। স্ত্রীর কাছে নগদ ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ১৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ১৫ ভরি স্বর্ণ, ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ৫০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৬০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ২.২০ একর কৃষি জমি।
মুুনিবুর রহমান নয়নের নগদ ১০ লাখ টাকা ছাড়া তার আর কোনো সম্পদ নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।
খুলনা গেজেট/হিমালয়