খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত
  কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে নতুন বাংলাদেশ গড়তে আর্থিক ও বিনিয়োগের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

ডিম দিয়েছে খানজাহান (রহ) এর মাজার সংলগ্ন দীঘির কুমির

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

বাগেরহাটের খানজাহান (রহ) এর মাজার সংলগ্ন দীঘির কুমির আবারও ডিম পেড়েছে। মাজারের পূর্ব ঘাটে বিনা ফকিরের বাড়ি সংলগ্ন পাড়ে গর্তের মধ্যে ডিম দিয়েছে কুমিরটি। ডিমগুলো ফোটানোর তা দিচ্ছে মা কুমিরটি। তবে এই ডিমে বাচ্চা ফোটা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।কারণ বিগত দিনে কয়েকবার ডিম পাড়লেও এই ডিমথেকে কোন বাচ্চা ফোটেনি।

জানাযায়, কিছুদিন আগে কুমিরটি বিনার বাড়ীসংলগ্ন দিঘির পূর্ব -দক্ষিণ কোনে ডিম পেড়েছে।

ওই ডিম ধুলামাটি দিয়ে ঢেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য এখন ‘তা’ দিচ্ছে মা কুমিরটি। মাঝে মধ্যে খুব অল্পসময়ের জন্য কুমিরটি দীঘিতে নেমে আবার ফিরে আসছে ডিমে ‘তা’ দিতে। ডিম পাড়ার খবরে দর্শনার্থীও বেড়েছে মাজারে। দর্শনার্থী কেউ কাছে গেলেই তেড়ে আসছে কুমিরটি। কুমিরটির অবস্থানের আশপাশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে মাজারের খাদেমরা।

কুমির দেখতে আসা ঢাকার কামরাঙ্গীচর এলাকার জান্নাতুল ফেরদাউস মম বলেন, ছোট বেলা থেকে বাগেরহাটের খানজাহান আলী (রহ) এর মাজার ও দীঘির গল্প শুনেছি। দীঘির কুমির দেখার খুব সখ ছিল আমার। আজ স্বচোক্ষে দেখলাম, খুব ভাল লাগছে। তবে কুমিরের ডিমগুলো দেখতে পারলে আরও ভাল লাগত।

ইব্রাহিম ইসলাম নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, মাজারে অনেকবার এসেছি। কিন্তু কুমিরের দেখা মেলেনি। ডিম পাড়ার সুবাদে আজ কুমিরটিকে দেখলাম। খুশি হয়েছি। আমার সাথে যারা রয়েছে তারাও খুশি হয়েছে।

বিনা ফকির বলেন, আমার বাড়ির পাশে কুমিরটি ডিম পেড়েছে। এবার মনে হয় ৫০ থেকে ৬০ টি ডিম দিয়েছে, তিন মাস এখানে থাকবে। ডাঙ্গায়ই খাবার দিতে হয়। মুরগির গোশ পিস পিস করে দেই, তাই ও খায়। তবে এত কষ্ট করে ও ডিমে তা দেয়, কিন্তু ডিম দিয়ে কোন বাচ্চা ফুটে বের হয় না। এটার জন্য আমার খারাপ লাগে।

বিনা আরও বলেন, মা কুমিরটি যখন এখানে এসে ডিম পারে পুরুষ কুমিরটিও তখন ওর কাছাকাছি থাকে। কখনও মাটির উপরে আসে না। তবে দীঘির মধ্যেই সে থাকে।

খানজাহান আলী (রহ.) মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, খানজাহান আলী (রহ) দীঘির পানি রক্ষার জন্য কুমির লালন পালন করতেন। ৬‘শ বছরের বেশি সময় ধরে খানাজাহান আলী (রহ) লালনকৃত কুমিরের বংশধর এই দীঘিতে বেচে ছিল। কিন্তু সেই কুমিরগুলো এখন আর বেচে নেই। মাদ্রাজ থেকে আনা এই কুমিরটি কয়েক বছর ধরে ডিম পাড়লেও তাতে বাচ্চা ফুটছে না। তাই দীঘিতে কুমিরের বংশবৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান প্রধান খাদেম।

হযরত খানজাহান (রহ.) আমল থেকে প্রায় সাড়ে ৬শ বছর ধরে মাজারের দীঘিতে ‘কালাপাড়’ ও ‘ধলাপাড়’ নামের মিঠা পানির কুমির (মার্স কোকোডাইল) বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছে। তবে হযরত খানজাহানের আমলের কুমিরের শেষ বংশধরটিও মারা যায়। পরে ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ কোকোডাইল ফার্ম থেকে মিঠা পানির ছয়টি কুমির খানজাহানের দীঘিতে ছাড়া হয়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!