মাঠে দুই দল মিলে ট্রফির ফটোসেশনে ব্যস্ত। আফগানিস্তানের পুরো দলটার সঙ্গে বাংলাদেশের কয়েক জন ক্রিকেটার। একটু দূরে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে মনোযোগী রাসেল ডমিঙ্গো। ট্রফির ফটোসেশন শেষ হতেই লজিস্টিকস ম্যানেজার নাফিস ইকবালকে তাড়া দিলেন বাংলাদেশের হেড কোচ। সংবাদ সম্মেলনে যেতেই এই তাড়া ডমিঙ্গোর।
সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এসেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে নাফিস ঘোষণা করলেন, ‘ভাই, ওর ফ্লাইট আছে, তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়েন।’ গতকাল (৫ মার্চ) রাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন ডমিঙ্গো। বাংলাদেশের পরের সিরিজটা দক্ষিণ আফ্রিকায়। আগামী ১২ মার্চ উড়াল দেবে টাইগাররা। সেখানেই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন ডমিঙ্গো।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের হার নিয়ে ময়নাতদন্তই করতে হয়েছে এই প্রোটিয়া কোচকে, যেখানে ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দুষেছেন তিনি। বড় জুটি করতে না পারা, সেট হওয়ার পরও মুশফিকদের আউট বাংলাদেশকে চাপে ফেলেছে। মিরপুরের উইকেট ১৬০ রানের না হলেও ১১৫ রানের ছিল না মনে করেন ডমিঙ্গো। তিনি বলেছেন, ‘আজ (গতকাল) উইকেটে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। তবে উইকেট ১১৫ রানের ছিল না। আবার উইকেট ১৬০ রানেরও নয়। তবে ১৩০-১৪০ হতে পারতো আদর্শ স্কোর।’
প্রথম ম্যাচ জিতলেও গতকাল আফগানদের কাছে ৮ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। সিরিজটা শেষ হয়েছে সমতায় (১-১)।
টপ অর্ডার আউট হওয়ার পর মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ৪৩ রানের জুটিতে লড়াকু স্কোর গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু যখনই আক্রমণ করার সময় এসেছে, তখনই আউট হয়েছেন ব্যাটাররা। ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমরা ২০, ২৫ রানের জুটি গড়ছি। বড় জুটি হচ্ছে না। ৭০ রানের জুটি হতে হবে। ব্যাটাররা সেট হয়েও আউট হয়ে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হচ্ছে, এভাবে বড় স্কোর হয় না।’
তবে ফিল্ডিং নিয়ে যারপনাই বিরক্ত ডমিঙ্গো। কারণ প্রতি ম্যাচেই ক্যাচ ফেলছেন ফিল্ডাররা। গতকালও তিনটি ক্যাচ পড়েছে। ডমিঙ্গো বলেন, ‘শুধু আজকে (গতকাল) নয়, প্রতি ম্যাচেই ক্যাচ পড়ছে। গত পাঁচ ম্যাচে ৯টি ক্যাচ পড়েছে। এটা আমাদের বিশ্বকাপে, বিশ্বকাপের পরে এখানেও পিছিয়ে দিয়েছে। এটা টেস্টে হচ্ছে, ওয়ানডেতেও। সত্যিই চিন্তার কারণ। আপনাকে সব ড্রিল করানো যাবে, কিন্তু দিন শেষে ক্যাচটা আপনাকেই ধরতে হবে।’
আফগানদের বিপক্ষে গতকালও ৫৮টি ডট বল খেলেছেন ব্যাটাররা। টি-২০তে এত ডট বল খেললে ম্যাচ বাঁচানো কঠিন বলে উল্লেখ করেন ডমিঙ্গো।
তবে সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল হেড কোচকে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দলের সঙ্গে থাকবেন কি না, জানতে চাইলে অবাক হয়ে যান ডমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘মানে কী? আমি কোথায় থাকবো? আপনি কিছু জানেন কি? আমার কোথায় থাকার কথা?’
তখনই সংবাদ সম্মেলন শেষ করে তিরিক্ষি মেজাজ নিয়ে বের হয়ে যান ডমিঙ্গো। গুঞ্জন আছে, দেশের মাটিতেই না কি টাইগারদের ড্রেসিংরুমে তার বিচরণ শেষ হয়ে যাচ্ছে!
খুলনা গেজেট/ এস আই