খুলনা, বাংলাদেশ | ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু, করোনায় এক
  বিগত দিনে সরকার নিজস্ব জায়গায় সামাজিক ব্যবসা দিবস পালন করতে দেয়নি: প্রধান উপদেষ্টা
  মোংলায় লাইটা‌রের ধাক্কায় ডুবে গেছে ফ্লাইঅ্যাশ বোঝাই কার্গো

টিপু হত্যায় জড়িত যেই হোক ছাড় দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

গে‌জেট ডেস্ক

মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। খুনিদের দ্রুত ধরা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু খুনের ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে। একই ঘটনায় গুলিতে কলেজছাত্রী প্রীতি হত্যার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় জড়িতরা যেই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ ঘটনায় নেপথ্যে থেকে যদি কেউ কলকাঠি নেড়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জড়িতদের গ্রেপ্তার ও হত্যার রহস্য উন্মোচনে র‌্যাব ও ডিবি পুলিশসহ কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে জাহিদুল মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জাহিদুল ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশ দিয়ে রিকশায় যাচ্ছিলেন বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতি। তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ গাড়িচালক মুন্না বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুরে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৮।

এজাহারে ডলি বলেন, আমার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। আমার বাবার মতিঝিল কাঁচাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। আমার স্বামী বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের ১০ বছর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয়ভাবে কোন্দল ছিল। গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামীকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।

এজাহারে তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনের মতো গতকাল (বৃহস্পতিবার) মাইক্রোবাস নিয়ে গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্নাসহ তিনি হোটেলের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান নামে রেস্টুরেন্ট কাজ শেষে বাসায় আসার পথে রাত আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুর মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। এ সময় গুলির কারণে আমার স্বামীর গলার ডান পাশে, বুকের বাম পাশে, বুকের বাম পাশের বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যে নাভির নিচে, বাম কাঁধের ওপরে, পিঠের বাম পাশের মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বাম পাশের কোমর বরাবর, পিঠের ডান পাশের কোমরের ওপর মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। দুষ্কৃতকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করার সময় প্রীতি নামে এক পথচারীও নিহত হন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজাহানপুর থানার ওসি মনির হোসেন মোল্লা। তিনি বলেন, কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

তবে একই ঘটনায় রিকশায় থাকা যাত্রী বদরুন্নেসা কলেজছাত্রী প্রীতি খুনের বিষয়ে মামলা করবেন না বলে জানিয়েছেন তার বাবা। শুক্রবার সকালে ঢামেক মর্গে আসেন প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন।

তিনি বলেন, মেয়ের হত্যায় বিচার চাই না। মামলা চালানোর মতো অবস্থাও নেই। আমরা নিরীহ মানুষ। বিচার চাইলে আল্লাহ’র কাছে চাই। তিনিই বিচার করবেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রীতিদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। সেখানে যাতায়াত কম। বাবার চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকা পরিবারের।

প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, মিরপুর-২ একটি কোম্পানির ফ্যাক্টরির প্রোডাকশনে চাকরি করি। বেতন বেশি পাই না। অনেক কষ্টে মেয়ে প্রীতি ও ছেলে সোহায়েব জামাল সামি ও স্ত্রীকে নিয়ে ২১৮ পশ্চিম শান্তিবাগে ভাড়ায় থাকি।

মেয়ে হত্যার বিচার চান কি না ও মামলা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা করব না। মামলা পরিচালনা করার মতো অবস্থা ও সুযোগ আমার নাই৷ কোনো বিবাদে জড়াতে চাই না। কেউ যদি সহযোগিতা করে সেটা ভিন্ন বিষয়।

তিনি বলেন, প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে। পরিবারের অবস্থা বিবেচনা করে প্রীতি নিজে চাকরির চেষ্টা করছিল৷ ১৫ হাজার টাকায় একটা অফিসে চাকরি নিয়েছিল। সামনের মাসে জয়েন করার কথা ছিল মেয়েটার। কিন্তু সেটা আর হলো না।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!