ঝিনাইদহে স্ত্রী ও ছেলেকে হত্যার দায়ে মো. সুজন (৩৫) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল মতিন এ রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সুজন শৈলকুপা উপজেলার দোহা-নাগিরাট গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নোন্দীরগাতী গ্রামের সালেহা বেগমের মেয়ে ইয়াসমিনের বিয়ে হয় মো. সুজনের সঙ্গে। পরে তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর সুজনের পরকীয়া নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ হতে থাকে। এরই জেরে সুজন তার স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিছু দিন পর সুজন অন্যদের সঙ্গে নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে বিবাদে জড়াবে না বলে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। এর ১৫ দিন পর ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। সুজনের পরিবারের লোকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন- ওরা বেড়াতে গেছে। কিছু দিন পর সুজনের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায় না। পরে ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ওই বছরেই ২২ মার্চ তাদের পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন ইয়াসমিনের মা সালেহা বেগম। পরে আদালত সেটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন।
আদালতের নির্দেশে শৈলকুপা থানা পুলিশ জানতে পারে সুজন ফরিদপুরের সদরপুর থানার মৈজদ্দি-মাতব্বরকান্দি গ্রামে আত্মগোপনে আছেন। সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুজন স্বীকার করেন যে তার স্ত্রী ইয়াসমিনকে ফরিদপুরের পুদ্মা নদীর তালুকের চরে শ্বাসরোধ করে এবং ছেলে ইয়াসিনকে গলা টিপে হত্যা করে বালুচাপা দিয়ে রেখেছেন। পরবর্তীতে পুলিশ ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই মামলার শুনানি শেষে আদালত সুজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ইসমাইল হোসেন বলেন, স্ত্রী-সন্তানকে খুন খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আদালতের রায়ে ইয়াসমিনের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
খুলনা গেজেট/ এএজে