ঝিনাইদহের শৈলকূপায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির (২৪) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার রাতে তিন্নীর মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
পরিবারের দাবি, তিন্নী ধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জা ক্ষোভে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে তার লাশের ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।সন্ধ্যায় গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাকে।
তিন্নির খালাতো ভাই মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নি শৈলকূপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর ছোট মেয়ে। সে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার বড়বোন মিন্নির একই গ্রামের নুরুদ্দীনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় মিন্নি ও জামিরুলের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কিন্ত মিন্নিকে ফিরে পাওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠে জামিরুল। সে দীর্ঘদিন ধরেই পিতৃহীন দুই বোনের ওপর নানা সময়ে নিপীড়ন চালিয়ে আসছিল।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল তিন্নিদের বাড়িতে লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে ফিরে যায়। দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে রাত প্রায় ১২টার দিকে ফের জামিরুল ওই বাড়িতে আসে এবং তিন্নির উপর নির্যাতন চালায়। জামিরুল চলে যাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয় তিন্নি। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বড় বোন মিন্নির দাবি, পরিকল্পিতভাবে তার ছোট বোনকে হত্যা করা হয়েছে।
শৈলকূপা থানার ওসি (তদন্ত) মহসিন হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পড়ালেখা শেষ করা মেধাবী ছাত্রী তিন্নীর মৃত্যুতে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৫-৬ জনের নামে শৈলকুপা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তিন্নীর মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন। পরে তারা অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের কনুর উদ্দিনের ছেলে আমিরুল, খলিল শেখের ছেলে নাইম ও লাবিবসহ ৪ জনকে আটক করেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি জামিরুল এখনও পলাতক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম