ঝিনাইদহে আদালতে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করার ঘটনা ঘটেছে। মূল আসামি বাইরে ঘুরে বেড়ালেও তার জায়গায় অন্য আসামি কারাগারে রয়েছে। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ঝিনাইদহ পৌরসভার হামদহ পাড়ার গোলাম সরওয়ারের ছেলে সজল নুরে সৌরভ (২৫) গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজির পরও যখন তাকে না পেয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এরপর পুলিশি ভেরিফিকেশনে জানা যায় সে কারাগারে রয়েছে। তখনই বের হয়ে আসে লোমহর্ষক ঘটনা। সে একই মামলায় জামিনে থাকলেও তারই আরেক পরিচিত শামিমের হয়ে আদলতে প্রক্সি হাজিরা দিতে গেলে, আদালত সেই মামলায় তাকে জামিন নামন্জুর করে কারাগারে পাঠায়ে সেই থেকে সে কারাগারে রয়েছে ।
মামলার এজাহারে জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর ঝিনাইদহ শহরের পানির ট্যাংক এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় সংঘর্ষে আহত ইমরান বাদী হয়ে ২৯ নভেম্বর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার ১০নং আসামি ঝিনাইদহ শহরের বকুলতলা এলাকার বাসিন্দা শামীম ও ১৬ নম্বর আসামি সজল নুরে সৌরভ।
১৬নং আসামি সজল নুরে সৌরভ গত ১০ ডিসেম্বর আদালত থেকে জামিন পান। সেই জামিনের পর থেকে তিনি বাড়িতে ছিলেন। কিন্তু গত ১৩ ডিসেম্বর ১নং আসামি শামিমের হয়ে আদালতে হাজির হন। আদালত সজলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়ি থেকে থানায় জিডি হলে বিষয়টি সামনে আসে।
এ ব্যাপারে মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারে সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এ ধরনের প্রতারণা সচরাচর দেখা যায় না। তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা তো কাউকে ভোটার আইডি কার্ড দেখিয়ে জামিন ধরি না। আমাদের কাছে এসে বলেছে আমরা জামিন ধরেছি। বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও এপিপি এড. শামসুজ্জামান তুহিন বলেন, আদালতকে প্রতারণা এর শাস্তি হতেই হবে । তিনি আরও বলেন, আইনের চোখে শামিম তো কারাগারে, কিন্তু সে তো বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আদালতে বিভ্রান্ত করছে তারা। আদালতের সঙ্গে এত বড় ধৃষ্ঠতা দেখাল আসামিরা। এরা অনেক বড় প্রতারণা করছে।