খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

জেলগেটে ছেলের সামনে মা-বাবার বিয়ে

গেজেট ডেস্ক

ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে ধর্ষণের শিকার সেই নারীর বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে উপস্থিত ছিল তাদের ৯ বছর বয়সী ছেলে। এই বিয়ের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির জামিন পাওয়ার কথা রয়েছে। শনিবার রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে তাদের বিয়ে হয়।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, আদালতের নির্দেশে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। সকাল ১১টার দিকে কনে পক্ষকে জেলগেটে আসার সময় দেওয়া ছিল। কনে ও বরপক্ষের ১৪ জন জেলগেটে এলে তাদেরকে জেল সুপারের কক্ষে বসানো হয়। পরে সাদা পাঞ্জাবি পরে জানালার পাশে এসে বর দাঁড়ান। জানালার অপর পাশে তার ছেলেকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। বন্দী বাবা হাসিমুখেই বিয়ের রেজিস্ট্রারে সই করেন। এসময় পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। পরে মালাবদল করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।

সিনিয়র জেল সুপারের পক্ষ থেকে কনের হাতে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় একটি কাতান শাড়ি। ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বর জানান, দীর্ঘ আট বছর ধরে তিনি কারাগারে। বিয়ে হওয়ায় ভালো লাগছে। কনেও বলেন, ‘বিয়ের পর ভালো লাগছে।’



সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, দেশের ইতিহাসে জেলগেটে বন্দীর বিয়ে এর আগে হয়েছে কিনা সে তথ্য তার জানা নেই। তার ধারণা, দেশে জেলগেটে এটাই প্রথম বিয়ে। এই বিয়ে তিনি ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন। অতিথি ও কর্মচারীদের মিষ্টিমুখেরও ব্যবস্থা করেন। বিয়ের প্রতিবেদন দ্রুতই আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার নারী ওই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির আত্মীয়। দু’জনেরই বাড়ি গোদাগাড়ীতে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সালে মেয়েটি গর্ভবতী হলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান প্রেমিক। মেয়েটির বয়স তখন ছিল ১৪ বছর। ওই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন।

২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ ব্যাপারে অভিযোগ গঠন হয়। বিচার শেষে ওই বছরের ১২ জুন ধর্ষণের দায়ে প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কারাগারেই ছিলেন। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। গত ২২ অক্টোবর সেই আবেদনের ওপর শুনানির সময় তার আইনজীবী জানান, আসামি ও ভুক্তভোগী নারী বিয়েতে সম্মত। শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কারাফটকে তাদের বিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। এ বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়। আদালত উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ আদেশ দেন। আদালতের ওই আদেশের ভিত্তিতেই শনিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

 

খুলনা গেজেট /এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!