খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  পিরোজপুরে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে শিশুসহ ৮ জন নিহত
সম্ভাব্য ব্যয় সা‌ড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

জেলখানাঘাট-তেরখাদা-গোপালগঞ্জ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা

একরামুল হোসেন লিপু

খুলনার জেলখানা ঘাট থেকে তেরখাদার মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জের চন্দ্রদিঘলিয়া পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা তৈরী করেছে। খুলনা সড়ক বিভাগের আওতায় পরিকল্পনাধীন কাজসমূহের তালিকার বিবরণীতে প্রকল্পটি ১১ নম্বরে রয়েছে এবং একই বিভাগের আওতায় পরিকল্পনাধীন এডিপি কাজের তালিকায় প্রকল্পটি রয়েছে ৭ নম্বরে। প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ৩৫ কিঃ মিঃ (সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ)। সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫’শ টাকা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনা জেলখানা ঘাট হতে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ৩৫ কিঃমিঃ কমবে এবং খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই থেকে ৩ ঘন্টা। এছাড়াও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনার তেরখাদা এলাকার পরিত্যক্ত জলাবদ্ধ বিলে শিল্পায়নের ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকাশে হবে। ঢাকা থেকে খুলনার আকাশ পথের চেয়ে সড়কপথে যোগাযোগ সহজ ও দ্রুততর হবে।

খুলনা সওজ সূত্রে জানা যায়, খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী ২০২১ সালের ১৩ আগস্ট খুলনা-তেরখাদা-গোপালগঞ্জ (চন্দ্রদিঘলিয়া)-ভাটিয়াপাড়া (৩৫ কিঃমিঃ) সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ এবং খুলনাস্থ জেলখানা ঘাটে ভৈরব নদীর উপর সেতু নির্মাণের গুরুত্ব বর্ণনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বরাবর ১টি ডিও লেটার প্রদান করেন। যার নং বাজাসস /১০২/খুলনা-৪ /২০১৯-১১০৬১৪। তাং ১৩/১০/২০২১।

পত্রে তিনি উল্লেখ করেন তাঁর নির্বাচনী এলাকা-১০২, খুলনা-৪ এর রূপসা, তেরখাদা এবং দিঘলিয়া এ তিনটি উপজেলা রূপসা এবং ভৈরব নদী দ্বারা বিভাগীয় শহর খুলনা থেকে বিচ্ছিন্ন। শ্রীফলতলা- সেনের বাজার জেলা মহাসড়কের (জেড -৭০৪২) ১ম কিঃমিঃ এ ভৈরব নদীর উপর জেলখানা ফেরিঘাট অবস্থিত। সড়কটির দক্ষিণ পার্শ্বে বিভাগীয় শহর খুলনা এবং উত্তর পার্শ্বে রুপসা এবং তেরখাদা উপজেলার সাথে সরাসরি সংযুক্ত। যোগাযোগব্যবস্থা নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন করার স্বার্থে উক্ত স্থানে ফেরীর পরিবর্তে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। খুলনা-তেরখাদা-গোপালগঞ্জ (চন্দ্রদিঘলিয়া)-ভাটিয়াপাড়া (৩৫ কিঃমিঃ) সড়কটি জাতীয় মহাসড়ক এ রূপান্তর করে ৪-লেনে উন্নীত করণ করা হলে শিল্পনগরী খুলনার সাথে বাগেরহাট-নড়াইল-গোপালগঞ্জসহ রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হবে এবং অত্র অঞ্চলের জনসাধারণ খুলনা জেলার রূপসা তেরখাদা উপজেলা এবং বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলা হয়ে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের উপর দিয়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এক্সপ্রেস হাইওয়ে হয়ে রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

এছাড়া পদ্মা সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের শিল্পোন্নয়নে বিপ্লব সাধিত হবে। বর্ণিত সড়কটি ভাঙ্গা- ভাটিয়াপাড়া- মোল্লাহাট-ফকিরহাট- নওয়াপাড়া (এন-৮০৫) জাতীয় মহাসড়ক এর বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সড়কটি দিয়ে রাজধানী ঢাকা যেতে ৩৫ কিঃমিঃ দূরত্ব এবং ৩ ঘন্টা সময় কম লাগবে। এছাড়া খুলনা, মশারেরপুর, জোয়ারের হাট, শেখপুরা, শিয়ালী, নিবুদিয়া তেরখাদা, কলাবাড়িয়া,বাইসোনা, নারাগাতি, নালামারা, যোগানিয়া, চন্দ্রদিঘলিয়া, গোপালগঞ্জ সহ এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা পুনর্জীবিত হবে এবং অত্র এলাকার উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য ও যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে বেকারত্ব নিরসন ঘটবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

প্রত্যাশিত আর্থসামাজিক উন্নয়নের অনুকূলে টেকসই নিরাপদ ও মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো এবং সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। চার লেন সড়ক নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে, কৃষিভিত্তিক পণ্য পরিবহন সহজতর হবে ফলশ্রুতিতে জনগণ পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে যা দারিদ্র্য বিমোচনে সাহায্য করবে।

পত্রে সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী আরও উল্লেখ করেন, ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তেরোখাদা শেখ আবু নাসের অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বর্ণিত চার লেন সড়ক নির্মিত হলে এ অঞ্চলের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে।

সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর ডিও লেটারের গুরুত্ব বিবেচনায় এনে খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সড়ক বিভাগ খুলনা এর আওতায় পরিকল্পনাধীন এডিপি কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে খুলনা -তেরখাদা -গোপালগঞ্জ (চন্দ্রদিঘলিয়া)-ভাটিয়াপাড়া (৩৫ কিঃমিঃ) সড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে দ্রুতই টেন্ডার আহবান করে বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা সম্ভব বলে খুলনা সওজ সূত্রে জানা যায়।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!